কাজ চলছে চেরি-জাগুয়ার-ল্যান্ডরোভার কারখানায়। ছবি: রয়টার্স
ব্রিটেনের বাইরে চিনেই প্রথম গাড়ি তৈরির কারখানা গড়ল জাগুয়ার-ল্যান্ডরোভার (জেএলআর)। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সাংহাইয়ের উত্তরে ছাঙ্গশু আর্থিক অঞ্চলে কারখানাটি চালু করল টাটা গোষ্ঠীর অধীন জেএলআর। তাদের লক্ষ্য বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি বাজার চিনে নিজেদের পায়ের তলার মাটি আরও মজবুত করে তোলা।
নানা হাতবদলের পরে ফোর্ড মোটরের হাতে আসে জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভারের মতো ঐতিহাসিক ব্রিটিশ ব্র্যান্ড দু’টি। কিন্তু কার্যত সেগুলি মুমূর্ষু হয়ে পড়েছিল। এর পর ২০০৮-এ তাদের কিনে নেয় টাটা গোষ্ঠী। এবং টাটাদের হাত ধরেই ধীরে ধীরে চাকা ঘোরে।
কিন্তু এত দিন ব্রিটেনেরই তিনটি কারখানায় গাড়ি তৈরিতে নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছিল সংস্থা। যদিও সেখানে তৈরি হওয়া গাড়ির প্রায় ৮০% ব্রিটেনের বাইরে ১৭৮টি দেশে বিক্রি হয়। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর পরে বৃহত্তম চিনের বাজারের পাশাপাশি নতুন সম্ভাবনাময় বাজারকেও পাখির চোখ করেছে তারা। পুণেতে পুরোদস্তুর গাড়ি কারখানা না-খুললেও যন্ত্রাংশ জুড়ে গাড়ি তৈরি করছে সংস্থা। আর এ বার চিনে খোলা হল পূর্ণাঙ্গ কারখানা, তবে যৌথ ভাবে। সেখানকার সংস্থা চেরি অটোমোবাইলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে।
শিলান্যাসের দু’বছরের মধ্যে কারখানাটি গড়তে সংস্থা লগ্নি করেছে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার। সেখানে আপাতত তৈরি হচ্ছে ‘রেঞ্জ রোভার ইভোক’। সেই গাড়ি বিক্রি শুরু হবে আগামী বছরের গোড়ায়। ২০১৬ সালের মধ্যে জেএলআর-এর তিনটি মডেল তৈরির আশা রয়েছে সংস্থার কর্তাদের। সব মিলিয়ে বছরে ১.৩০ লক্ষ গাড়ি তৈরি হওয়ার কথা।
এ দিন কারখানা চালুর অনুষ্ঠানে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমেরিটাস রতন টাটা, চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি, জেএলআর-এর সিইও র্যাল্ফস্পেথ, চেরি অটোমোবাইলের সিইও ওয়াই টংগ্যায়ো-সহ দুই সংস্থার শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শুধু বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি বাজার বলেই নয়, চিনে জেএলআর-এর চাহিদার কথা মাথায় রেখেই যে তাঁরা সে দেশে পা রেখেছেন তা-ও স্পষ্ট সংস্থার দেওয়া তথ্যে। যেমন চিনে প্রায় ২৭ লক্ষ গাড়ি বিক্রি হয় বছরে। এর মধ্যে গত বছর সেখানে এক লক্ষ জেএলআর বিক্রি হয়েছিল। আবার একই সঙ্গে এটি সংস্থার বৃহত্তম বাজারও। র্যাল্ফ জানান, প্রতি পাঁচটি রেঞ্জ রোভার ইভোক-এর মধ্যে একটি চিনে বিক্রি হয়। তাই চিনের ক্রেতাদের কাছে আরও বেশি করে তাঁদের গাড়ি পৌঁছে দিতেই কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত।
এর পাশাপাশি জেএলআর জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে আরও কিছু কারখানা খুলে ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে তারা। যেমন ব্রাজিলে চালু হবে একটি গাড়ি কারখানা। আমেরিকাতেও কারখানা চালুর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। এ নিয়ে অবশ্য এ দিন কিছু জানাননি টাটারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy