কাঁচা পাটের ঘাটতি চরমে উঠেছে। ফলে টান পড়েছে চটের বস্তার জোগানে। বহু চটকল বন্ধ হচ্ছে। প্রায় ৬০,০০০ কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। কেউ কেউ কাজ হারানোর মুখে। এই পরিস্থিতিতে সূত্রের খবর, চট বস্তার ঘাটতি মেটাতে খাদ্যশস্য ভরার জন্য কেন্দ্র প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। চটকল মালিকদের মতে, এটা নতুন বছরের ‘অশুভ সূচনা’। আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পাকাপাকি ভাবে চালু হতে পারে প্লাস্টিকের বস্তা। তাতে আরও শোচনীয় হবে চটশিল্পের হাল।
গত বছরের থেকে এ বার উৎপাদন অনেকটা কম হাওয়াই কাঁচা পাটের জোগানে টান পড়ার কারণ, জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সমস্ত মহল। ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১.২ লক্ষ বেল (১ বেল= ১৮০ কেজি পাট)। সরকারি সূত্রের খবর, উৎপাদন এ বছর ৩০% কম হয়েছে। এর আগে অধিক ফলনের ফলে পাটের উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় এ বার বহু চাষি পাটের পরিবর্তে অন্য শস্যের চাষ করেছেন। যেমন বনগাঁর পাট চাষি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘৬ একর (১৮ বিঘা) জমি আছে। আগে ৪ একরেই পাট চাষ করতাম। এ বার করেছি ১ একরেরও কমে। গত বছর ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকেও কম দামে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। অনেকটা লোকসান হয়েছে।’’
চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া জানান, ৮টি চটকল বন্ধ হয়েছে। জানুয়ারিতে আরও ৩টি বন্ধ হবে। অনেকে উৎপাদন তলানিতে এনেছে। প্রায় ৬০,০০০ কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি,
৫টির মতো চটকল কাজ বন্ধ করেছে।
এ দিকে চটকল মালিকদের পাশপাশি যে সব সংস্থা কাঁচা পাট গাট্টি বেঁধে (বেলার) চটকলে সরবরাহ করে, তারাও বড় সমস্যায় পড়েছে। বেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ওম সোনি বলেন, ‘‘কাঁচামাল না পেলে চটকলগুলি ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। কিন্তু আমরা যে কাঁচা পাট
বিভিন্ন মিলে পাঠিয়েছি, বহু ক্ষেত্রে তার দাম পাইনি। বরাত কমায় সমস্যায় পড়েছে চটকলগুলি। অনিশ্চিত আমাদের টাকা ফেরত পাওয়াও।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)