ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশার মধ্যে দাঁড়িয়েই কান্টার, নিয়েলসনের মতো একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার সমীক্ষা জানাল— দেশে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যগুলির চাহিদা এখনও তেমন বাড়েনি। তার মধ্যে সাবান, শ্যাম্পু, তেল, বিস্কুট-সহ অনেক কিছুই রয়েছে। নিয়েলসনের দাবি, মার খাচ্ছে মূলত শহর। তুলনায় এগিয়ে গ্রাম। তবে কান্টারের বার্তা, শহুরে চাহিদা তেমন বদলায়নি। গত বছরের ৪.৬% থেকে কমে হয়েছে ৪.৩%। গ্রামাঞ্চলে অনেকটা কমেছে। ৬.৫% থেকে নেমেছে ২.৭ শতাংশে। দু’ক্ষেত্রেই ঝিমুনির জন্য দায়ী করা হয়েছে সাধারণ মানুষের হাতে অর্থের অভাবকে। বলা হয়েছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে সংসার চালানোর খরচ বেড়েছে গৃহস্থের। কিন্তু আয় বাড়েনি বেশির ভাগেরই। এতে দৈনন্দিন কেনাকাটা কমানো টানা ছাড়া উপায় থাকছে না।
যদিও ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির দাবি, ধীরে হলেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তারা। গত সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে লোকসান হয়েছিল। জানুয়ারি-মার্চে কিছুটা লাভ এসেছে। তবে গত কয়েক মাসে বিক্রি বেড়েছে মূলত গ্রামে। কান্টার, নিয়েলসনের মতে, সুদিন আসতে বছর গড়িয়ে যেতে পারে।
ভোগ্যপণ্য তৈরির সংস্থা হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের এমডি রোহিত জাওয়া বলেন, “গত এক বছরে শহুরে চাহিদা ক্রমাগত কমেছে। বেড়েছে বরং গ্রামীণ এলাকায়। এই ঝোঁক বেশি মূলত উত্তর, মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে। পূর্বাভাস অনুযায়ী স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলে বিক্রি বাড়বে। বছর খানেক লাগতে পারে।” গোদরেজ কনজ়িউমার্সের সিইও সুধীর সীতাপতিরও অভিমত, ঘুরে দাঁড়াতে আরও ১২-১৮ মাস লাগবে। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬% হলে, এই ক্ষেত্রের বৃদ্ধি হওয়া উচিত ৭-৭.৫%। কিন্তু দু’বছর ধরে তা ৪ শতাংশে আটকে। চাহিদার ঝিমুনিই যার কারণ।
কান্টার-এর বার্তা, জানুয়ারি-মার্চে দেশে ভোগ্যপণ্য ক্ষেত্র বেড়েছে ৩.৫%। তিন বছরে সর্বনিম্ন। গত বছর ছিল প্রায় ৫.৫%। নিয়েলসন-এর দাবি, ওই সময়ে গ্রামে চাহিদার বৃদ্ধির হার ৯.২% থেকে কমে হয়েছে ৮.৪%। শহরে ৪.২% থেকে কমে ২.৬%। হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের সিএফও রীতেশ তিওয়ারির মতে, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের বিক্রির উপর নির্ভর করছে এই ক্ষেত্র কোন দিকে এগোবে। ম্যারিকোর এমডি সৌগত গুপ্ত বলেন, ‘‘শহরে গতি এতটা কমার কারণ, সাধারণ মানুষের খরচ বৃদ্ধি। কিন্তু বেশির ভাগ চাকরিজীবীরই সে ভাবে বেতন বৃদ্ধি না হওয়া।’’
নিয়েলসনে সমীক্ষা বলছে, টাকার অঙ্কে ভোগ্যপণ্য বিক্রি ঢিমে। তবে প্যাকেটের সংখ্যা বিকিয়েছে বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মানে অল্প দামে কম ওজনের ছোট প্যাকেট বার বার কিনেছেন মানুষ। যার কারণ হাতে পুঁজির ঘাটতি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)