Advertisement
১১ মে ২০২৪

পাশে দাঁড়াক ব্যাঙ্ক, দ্রুত জারি ফরমান, ভোটের মুখে জেট নিয়ে সতর্ক সরকার

সূত্রের দাবি, ভোটের মুখে জেট দেউলিয়া হলে বহু চাকরি যাবে। মুখ পুড়বে সরকারের।

বসে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজের একের পর এক বিমান।

বসে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজের একের পর এক বিমান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

সঙ্কটের ফাঁস শক্ত হচ্ছে জেট এয়ারওয়েজের গলায়। বসে যাচ্ছে একের পর এক বিমান। যাত্রীরা বাতিল উড়ানের টিকিটের টাকা ফেরতের দাবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। আর বেতন বাকি পড়ায় কাজ বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন হাজার খানেক পাইলট। অর্থের অভাবে শেষমেষ দেউলিয়া ঘোষণার পথেই হাঁটতে হবে কি না, তা নিয়ে বাড়ছে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে জেটকে বাঁচাতে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি মাঠে নামল মোদী সরকার।

সংস্থার কর্তাদের অবিলম্বে মন্ত্রকের সচিব ও বিমান নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএর সঙ্গে বৈঠকে বসতে বললেন বিমানমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিলেন মন্ত্রকের আধিকারিকদের। সূত্রের দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উদ্দেশে ফরমানও জারি হয়েছে, সংস্থাটিকে দেউলিয়া হওয়ার পথে ঠেলে না দিয়ে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুক তারা। বকেয়া ঋণগুলিকে বদলাক অংশীদারিতে। যা দেখে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি ব্যালটে চোখ রেখে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে থাকা আমজনতার টাকায় জেটকে উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে?

সূত্রের দাবি, ভোটের মুখে জেট দেউলিয়া হলে বহু চাকরি যাবে। মুখ পুড়বে সরকারের। আক্রমণ শানানোর অস্ত্র পাবেন বিরোধীরাও। তাই সংস্থাটিকে বাঁচাতে মরিয়া কেন্দ্র। বিশেষত এ দিন ডিজিসিএ যেখানে জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেটকে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেটের জট
সংস্থা সংবাদ

• দেশের বাজারের ছ’ভাগের এক ভাগ জেটের হাতে।
• গত তিন ত্রৈমাসিকে তেলের চড়া দাম, দুর্বল টাকা ও প্রতিযোগিতায় লোকসান হয়েছে।
• ঘাড়ে ঋণ ৮,০০০ কোটির।
• ১১৯টির মধ্যে বসে গিয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি বিমান।
• দেশে চলছে মাত্র ৪১টি।
• দেওয়া যাচ্ছে না ঋণে সুদ।
• আবু ধাবি থেকে বন্ধ উড়ান।
• পাইলট, ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন বাকি।
• থাকার কথা ৬০৩টি ঘরোয়া, ৩৮২টি আন্তর্জাতিক উড়ান। কিন্তু এখন তা নেই।
• কলকাতায় ছিল ২৭টি উড়ান। চলছে ৩-৪টি।

আজ দিনভর
• জেট নিয়ে অবিলম্বে বৈঠকে বসতে মন্ত্রকের সচিবকে নির্দেশ বিমানমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর।
• বেতন না পাওয়ায় মনোসংযোগে সমস্যা ও এর জেরে যাত্রী সুরক্ষা ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্কবার্তা ইঞ্জিনিয়ারদের।
• ৩১ মার্চের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ ঠিক না করলে ও বেতন না মেটালে, ১ এপ্রিল থেকে কাজ বন্ধের হুমকি পাইলটদের।
• বসে গিয়েছে আরও ছ’টি বিমান।
• সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে সংস্থার পাশে দাঁড়াতে বলেছে কেন্দ্র, যাতে জেট দেউলিয়া না হয়।
• প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল ও অংশীদার এতিহাদ শেয়ার বন্ধক রাখলে, টাকা ঢালতে পারে ঋণদাতারা।

ডিজিসিএ-র নির্দেশ
• উড়ান বাতিল হলে আগে থেকে তা যাত্রীদের জানাতে হবে জেটকে।
• ফেরাতে হবে টিকিটের টাকা।
• দিতে হতে পারে ক্ষতিপূরণও।
• অন্য সংস্থার উড়ানে জায়গা করে দিতে হবে

শিল্পের জন্য
• এই অবস্থায় নির্দিষ্ট রুটের টিকিটের দাম যাতে না বাড়ে, তা নিশ্চিত করার পরামর্শ ডিজিসিএ-র।
• দেওয়া হয়েছে উড়ানের সংখ্যা বাড়িয়ে দর নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাবও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার কর্তারা যদিও বলছেন, তাঁদের সমস্যাটা পরিচালনা ঘিরে। ছ’মাস ধরে সঙ্কট চলছে। অথচ এক জনেরও চাকরি যায়নি। এক কর্তার কথায়, ‘‘এতিহাদ (হাতে ২৪% শেয়ার) পুঁজি ঢালতে চায়। কিন্তু শর্ত, বদলাতে হবে পর্ষদ। গয়ালের (হাতে ৫১%) থেকে সরাতে হবে রাশ। সংস্থা বিপর্যস্ত হলে এতিহাদ টাকা ঢালতে চাইবে কেন?’’ তবে কর্তারা মানছেন, জেট ঘুরে দাঁড়ালেও যাত্রীদের অাস্থা ফিরে পেতে সময় লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE