Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে পতন বাজারে

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে প্রত্যাঘাত ভারতীয় সেনাবাহিনীর। আর, তার জেরেই রক্তাক্ত শেয়ার বাজার, তলানিতে টাকা। পতনের কবল থেকে রেহাই পায়নি পাকিস্তানের শেয়ার বাজারও।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০২
Share: Save:

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে প্রত্যাঘাত ভারতীয় সেনাবাহিনীর। আর, তার জেরেই রক্তাক্ত শেয়ার বাজার, তলানিতে টাকা। পতনের কবল থেকে রেহাই পায়নি পাকিস্তানের শেয়ার বাজারও।

পাক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মাঝরাত থেকে আচমকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বৃহস্পতিবার সন্ত্রস্ত করে তোলে ভারতীয় শেয়ার বাজারকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা কি বেজে উঠল, এই প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে থাকে লগ্নিকারীদের মধ্যে। যুদ্ধ শুরু হলে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে শেয়ার বাজার তলিয়ে যাবে, এই ভয়ই কাবু করে লগ্নিকারীদের। তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক আট বছর বাদে উৎপাদন কমাতে একমত হওয়ার জেরে বাজার খোলার মুখেই সেনসেক্স সামান্য বাড়লেও মুহূর্তেই তা ধুয়ে-মুছে যায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর কথা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই লগ্নিকারীরা শেয়ার বিক্রির জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন। কোনও বাছবিচার না-করেই অবাধে পড়তে থাকে শেয়ার দর। দুপুরের মধ্যে সেনসেক্স পড়ে যায় ৫৭৩ পয়েন্ট। নেমে যায় ২৮ হাজারের নীচে। শেয়ার দরে পতনের ঢেউ এসে প়ড়ে বিদেশি মুদ্রার বাজারেও। ডলারে টাকা সকালের দিকে পড়ে যায় ৪৬ পয়সার মতো।

একই ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপাশে গিয়ে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের খবরে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক কেএসই১০০-ও সকালে পড়ে যায় ৭০০ পয়েন্টের বেশি বা ০.৫০ শতাংশ। তবে ইসলামাবাদ পরে দাবি করে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নয়, নয়াদিল্লি আসলে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানান, দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রশাসন তৈরি। এর পরে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জও কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। সূচক শেষ পর্যন্ত পড়ে ০.১৫ শতাংশ।

ভারতেও বেলা বাড়ার সঙ্গে আতঙ্কের রেশ কিছুটা কাটতে শুরু করে। বরং পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার উৎসাহও চোখে পড়ে। তা ছাড়া বৃহস্পতিবার ছিল আগাম লেনদেনের সেট্‌লমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই হস্তান্তরের জন্য শেয়ার কিনতে থাকায় থমকে যায় সূচকের অবাধ পতন। দিনের শেষে সেনসেক্স কিছুটা উঠে থামে ২৭,৮২৭.৫৩ অঙ্কে, যা বুধবারের চেয়ে ৪৬৫.২৮ পয়েন্ট বা ১.৬৪% কম। তবে এ দিন মুছে গিয়েছে লগ্নিকারীদের ২.৪৫ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। গত ২৩ জুন ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের পরের দিন ২৪ জুন সেনসেক্স পড়ে যায় ৬০৪ পয়েন্ট। তার পর তা আর এত বেশি পড়েনি। এ দিন নিফ্‌টি-ও ১৫৩.৯০ পয়েন্ট বা ১.৭৬% পড়ে বন্ধ হয় ৮৫৯১.২৫ পয়েন্টে। সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছুটা বাড়ে ভারতীয় টাকাও। বাজার বন্ধের সময়ে টাকার পতন ছিল ৩৯ পয়সা। এক ডলার হয় ৬৬.৮৫ টাকা।

বাজারের হাল ফেরাতে সাহায্য করে কেন্দ্রের অর্থনীতি বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসের মন্তব্য। এক টুইট বার্তায় তাঁর দাবি, জঙ্গি হানার বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পিত অপারেশন’ শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধিতে ইন্ধন জুগিয়ে আর্থিক স্থিতির পথেই নিয়ে যাবে ভারতকে। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া তার রিপোর্ট ‘ইকোর‌্যাপ’ -এ বলেছে, বাজারে বড়সড় প্রভাব ফেলবে না ভারতীয় সেনার এই অপারেশন। কারণ, ভারতের আর্থিক ভিত যথেষ্ট জোরালো। রিপোর্ট উল্লেখ করেছে, কার্গিল যুদ্ধের সময়েও প্রথমে বাজার পড়ে যায়। পরে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে সূচক।

হিন্দ কপার বিলগ্নিকরণ। হিন্দুস্তান কপারের বিলগ্নিকরণ শুরু হয়েছে আজ, বৃহস্পতিবার। শেয়ার পিছু ৬২ টাকা দরে সংস্থার ৭% অংশীদারি বিক্রি করছে কেন্দ্র। এর মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা তোলাই লক্ষ্য। প্রথম দিনেই সংস্থার জন্য বরাদ্দ রাখা ৫.১৮ কোটি শেয়ার কিনতে বিপুল সাড়া মিলেছে। আগামী কাল সাধারণ লগ্নিকারীদের কাছে শেয়ার বেচা হবে। হিন্দ কপারে কেন্দ্রের ৮৯.৯৫% অংশীদারি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Surgical strike SENSEX
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE