বণিকসভার মঞ্চে অরূপ রায়।
দক্ষ কৃষি বিপণন ব্যবস্থা গড়া নিয়ে রাজ্যের ভাবনা জানাতে বণিকসভার মঞ্চে এসেছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী। কিন্তু কৃষক বাজার তৈরির ফিরিস্তি দেওয়া কিংবা হিমঘর নির্মাণের জন্য শিল্পমহলের কাছে আর্জি জানানো ছাড়া এ নিয়ে রাজ্যের উদ্যোগের কোনও সুসংহত পরিকল্পনা অনুচ্চারিতই থেকে গেল তাঁর কথায়।
এমনকী, কৃষি বিপণনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এপিএমসি আইন সংশোধনের প্রসঙ্গে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি। বরং মুখমন্ত্রীর পথেই হেঁটে কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নে সব বণিকসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে কোর কমিটি গড়ার কথা জানিয়েছেন।
কৃষি বিপণন ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়িয়ে কৃষককে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বুধবার এমসিসি চেম্বার আয়োজিত আলোচনাচক্রের মূল বক্তা ছিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি জানান, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৯৪টি কৃষক বাজার তৈরি করেছে। আরও ৮৫টির কাজ চলছে। শস্য সংরক্ষণে পরিকাঠামোর অভাবের কথা মেনে নিয়ে ওই কৃষক বাজারের সঙ্গেই হিমঘর তৈরির জন্য বণিকসভার সদস্যদের কাছে বার কয়েক আর্জি জানান তিনি।
কিন্তু শিল্পমহলের প্রশ্ন, শুধু হিমঘর তৈরি করলেই দক্ষ কৃষি বিপণন ব্যবস্থা তৈরি হবে কি? পাশাপাশি সার্বিক ভাবে কৃষি বিপণনে লগ্নি না-করতে পারলে শুধুমাত্র হিমঘর গড়তে বেসরকারি ক্ষেত্র কতটা আগ্রহী হবে? আর দক্ষতা বাড়়াতে ও বেসরকারি লগ্নি পেতে হলে এপিএমসি আইন সংশোধন একান্ত জরুরি, যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তা না হওয়ার জন্যই এখনও এই ক্ষেত্রে লগ্নি করতে রাজি নয় শিল্পমহলের একটা বড় অংশ। ফলে কৃষি বিপণনে বেসরকারি পুঁজি পেতে রাজ্যের সার্বিক ভাবনা সম্পর্কেই জানতে আগ্রহী তারা। কিন্তু এ দিন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর কথা থেকে তার কোনও স্পষ্ট দিশা পায়নি তারা।
অরূপবাবু অবশ্য এই ক্ষেত্রের উন্নয়নে কোর কমিটি তৈরির কথা বলেছেন। যদিও শিল্পমহলের একাংশ নিশ্চিত নয়, তাতে কাজের কাজ কতটা হবে। কারণ ক্ষমতায় এসেই শিল্প সংক্রান্ত এমন কমিটি তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও রাজ্যে শিল্প কতটা এগিয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে।
অন্য দিকে, চাষিদের কল্যাণের লক্ষ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে কিসান ক্রেডিট কার্ড বিলি হলেও কাজের কাজ কতটুকু হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ কৃষি বিপনন মন্ত্রীই। তাঁর স্বীকারোক্তি, আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। তবে তার দায় তিনি ব্যাঙ্কগুলির উপরই চাপিয়ে বলেন, ‘‘চাষিদের ওই কার্ড আমরা দিলেও তাঁরা ঋণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাচ্ছি। এ নিয়ে কৃষি দফতরের অফিসারেরা ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলছেন।’’ উল্লেখ্য, কিসান ক্রেডিট কার্ড উদ্বোধনের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ওই কার্ড থাকলে কৃষক ৭% হারে সুদ পাবেন। ব্যাঙ্কের দেনা দ্রুত মেটালে সুদের হার নেমে আসবে ৪ শতাংশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy