Advertisement
১০ মে ২০২৪
১,৫০০ কোটির পুঁজি ঢালবে ব্যাঙ্ক, শুরু ক্রেতার খোঁজও

জেটের ককপিট ছাড়ছেন গয়াল

জেটের বোর্ডে সংস্থার অন্যতম অংশীদার আবুধাবির উড়ান সংস্থা এতিহাদের প্রতিনিধি কেভিন নাইটও সরে যাচ্ছেন পরিচালন পর্ষদ থেকে।

বসে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজের একের পর এক বিমান।

বসে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজের একের পর এক বিমান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৩৪
Share: Save:

কার্যত যুগের অবসান। প্রায় সিকি শতাব্দী জেট এয়ারওয়েজের ককপিটের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখার পরে তার পরিচালন পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার নরেশ গয়াল। সরে যাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী অনিতা গয়ালও। দেনা আর ক্ষতির বোঝায় ধুঁকতে থাকা বিমান পরিষেবা সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ আপাতত যাচ্ছে স্টেট ব্যাঙ্ক সমেত ঋণদাতাদের হাতে।

জেটের বোর্ডে সংস্থার অন্যতম অংশীদার আবুধাবির উড়ান সংস্থা এতিহাদের প্রতিনিধি কেভিন নাইটও সরে যাচ্ছেন পরিচালন পর্ষদ থেকে।

এই রদবদলের শর্তে সোমবারই স্টেট ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ১৫০০ কোটি টাকা জেটকে নতুন করে ধার দেবে ঋণদাতারা। তা ছাড়াও ব্যাঙ্কের কাছে যে বিশাল অঙ্কের ঋণ বকেয়া রয়েছে, সেই টাকা জেটকে শোধ করতে হবে না। সেই টাকার সমমূল্যের শেয়ার ১ টাকার বিনিময়ে ব্যাঙ্ক হাতে নেবে।

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে জেটের এই আর্থিক অনটনের জন্য যদি একের পর এক কর্মীর চাকরি যায়, তা হলে মুখ পোড়ার সম্ভাবনা ছিল কেন্দ্রের। বিশেষত যেখানে উড়ান প্রকল্পের কথা বলে তারা। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় জেটকে বাঁচাতে স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে নির্দেশ এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই। তার পরেই সোমবার নতুন করে ১,৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা। পাশাপাশি, নতুন একটি ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করে তাদের হাতে পরিচালনার ভার তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। জানা গিয়েছে, এক জন পেশাদার কর্তাকে নিয়োগ করা হবে। সেখানে প্রতিনিধিত্ব চেয়ে স্টেট ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়েছে কর্মী ও অফিসারদের সংগঠন।

নতুন পুঁজি দিয়ে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন জেটের এখনকার কর্তারা। তা ছাড়াও যে বিমানগুলি টাকার অভাবে বসিয়ে দিতে হয়েছিল, সেগুলিও এ বার ডানা মেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, জেটের বেশিরভাগ শেয়ার কিনে তার পরিচালনার দায়িত্ব হাতে তুলে নেওয়ার জন্য টাটা, এতিহাদ-সহ বিভিন্ন বড় সংস্থার কাছে নতুন করে দরবার করা হবে।

তবে নরেশ গয়ালের সরে দাঁড়ানোকে ভারতের বিমান পরিবহণে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। কর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, গয়াল তাঁদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি ছাতার মতো তাঁদের আগলে রাখতেন বলেও কারও কারও দাবি। কিন্তু বছর তিনেক ধরেই নরেশের হাত থেকে পরিচালনার রাশ আলগা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছিল। তাঁরই হাত ধরে আসা কিছু উচ্চপদস্থ কর্তা সংস্থার ভরাডুবির কারণ বলেও অনেকে মনে করেন। নরেশ সরে যাওয়ার পরে তাঁদের কর্তৃত্বও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

‘বিদায়ের দিনে’ কর্মীদের ২৫ বছরের উড়ানের কথা মনে করিয়েছেন গয়াল। বলেছেন, চারটি ভাড়ার বিমান নিয়ে শুরু করে হাজার উড়ানে পৌঁছনোর কথা। আর এয়ার ইন্ডিয়া ছেড়ে কেন্দ্র হঠাৎ জেট বাঁচাতে মরিয়া কেন, এই প্রশ্ন আঁচ করে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, বিমান ভাড়া মাত্রাছাড়া হতে না দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। কর্মীদের চিঠিতে গয়াল লিখেছেন, সরে গেলেও জেটকে ফের পুরোদমে উড়তে দেখতে চান তিনি। আর সংস্থায় তাঁর শেয়ার ফের বৃদ্ধির রাস্তা খোলা রাখার কথা এ দিন জানিয়ে রাখল স্টেট ব্যাঙ্কও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE