বিরোধীদের লাগাতার দাবির মুখে ফের ‘না’ মোদী সরকারের।
পেট্রল, ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক কমানোর সম্ভাবনা সোমবার আরও একবার উড়িয়ে দিল কেন্দ্র। স্পষ্ট জানাল, বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে মোটেই ভাবছে না তারা। এ দিন কেন্দ্রের আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গের দাবি, দেশে তেলের দাম এখনও এমন জায়গায় পৌঁছয়নি যে শুল্ক কমানোর মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই এমন কোনও পদক্ষেপের কথা বিবেচনাতেই নেই। যদিও দর কতটা উঁচুতে পৌঁছলে শুল্ক ছাঁটার কথা ভাবা যায়, সে সম্পর্কে কোনও ইঙ্গিত দেননি তিনি। শুধু জানিয়েছেন, দাম যদি না বাড়ে, তা হলে শুল্ক কমানোরও কোনও কারণ নেই।
সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়িয়ে ডিজেল অবশ্য ইতিমধ্যেই সব নজির ভেঙেছে। পৌঁছেছে এমন উচ্চতায়, যেখানে আগে কখনও উঠতে দেখা যায়নি তাকে। আর গত মাসে পেট্রলও ভেঙেছে কলকাতায় পাঁচ বছর আগের রেকর্ড। এই অবস্থায় গর্গের মতে, উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাইয়ের মতো পরোক্ষ ভর্তুকি কথা ভাবা যেত তখনই, যদি দাম নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছত। কিন্তু এখনও সেই পরিস্থিতি আসেনি বলেই মনে করছেন তিনি।
উল্টে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম আগামী দিনে কমবে বলে গর্গের আশা। বলেন, আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা থিতিয়ে যাবে।
জোগান বাড়বে মার্কিন শেল গ্যাসের। তার হাত ধরে কমবে অশোধিত তেলের দাম। তাঁর দাবি, যা সত্যি হলে দেশেও দর কমা উচিত। যদিও ৩৮ জন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে এ দিনই রয়টার্সের পূর্বাভাস, তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক কম উৎপাদনের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় সারা বছরেই চড়া থাকবে তেল।
দেশে অবশ্য প্রায় এক সপ্তাহ পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়ছে না। আজ, মঙ্গলবারও তা অপরিবর্তিতই রয়েছে। যা দেখে অনেকের মত, এটাও হতে পারে কেন্দ্রের আর এক চাল। কর্নাটক ভোটের জন্যই হয়তো আপাতত তাতে লাগাম পরিয়েছে কেন্দ্র। কারণ, বিরোধীদের অভিযোগ, গুজরাত ভোটের আগে কম থাকলেও, তা শেষ হতেই ফের চড়তে দেখা গিয়েছিল তেলকে। গর্গের অবশ্য দাবি, ভোটের জন্য শুল্ক ছাঁটাই বা দাম একই রাখার মতো ঘটনা ঘটেনি।
বস্তুত, বিরোধীরা বহু দিন ধরে তেলের অস্ত্রে বিঁধছে কেন্দ্রকে। প্রশ্ন তুলছে, চার বছর আগে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ছিল ব্যারেলে ১০৫ ডলার। এখন ৭৪-এর আশেপাশে। তা হলে দেশে এখন পেট্রল, ডিজেলের দর ২০১৪ সালের মে-র তুলনায় বেশি কেন? পাশাপাশি, কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী জমানায় শুরুর দিকে যখন অশোধিত তেলের দর কমছিল, তখন ওই শুল্ক, সেস বাড়িয়ে জ্বালানির দর একই রেখেছিল কেন্দ্র। অথচ এখন তা কমছে না।
তা সত্ত্বেও মোদী সরকার বারবার শুল্ক কমানোর দাবি নাকচ করেছে। যুক্তি দিয়েছে, এতে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। বরং রাজ্যগুলি ভ্যাট কমাক। এ দিনও ছিল সেই একই সুর। আরও জোরালো ভাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy