Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এক জায়গায় সব বিল নভেম্বরেই

বিদ্যুৎ, গ্যাস কিংবা ফোনের বিল। সঙ্গে পুরসভার সম্পত্তি বা জলকরও। হন্যে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঢুঁ মারার বদলে এ ধরনের প্রায় সমস্ত টাকা এক জায়গায় মিটিয়ে ফেলার পরিষেবা আনার কথা আগেই ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৯
Share: Save:

বিদ্যুৎ, গ্যাস কিংবা ফোনের বিল। সঙ্গে পুরসভার সম্পত্তি বা জলকরও। হন্যে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঢুঁ মারার বদলে এ ধরনের প্রায় সমস্ত টাকা এক জায়গায় মিটিয়ে ফেলার পরিষেবা আনার কথা আগেই ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, নভেম্বর নাগাদ এই পরিষেবার সুবিধা আসতে চলেছে আমজনতার মুঠোয়।

এখন এই সমস্ত বিল মেটাতে অনেকে সর্বত্র নিজে হাজিরা দেন। নইলে শরণাপন্ন হতে হয় এটিএম, ইসিএস কিংবা নেট ব্যাঙ্কিংয়ের। এই পরিষেবার ঝুলি সামনে ধরে পেটিএম কিংবা অক্সিজেন-এর মতো ‘এগ্রিগেটর’ সংস্থাও। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ভাবে। এই সব রাস্তায় হেঁটে মেটানো যায় শুধু সেই সমস্ত জায়গার বিলই, যাদের সঙ্গে ওই ব্যাঙ্ক বা সংস্থার গাঁটছড়া আছে। অর্থাৎ, আলাদা আলাদা জায়গায় যাওয়া কিংবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারার ঝক্কি সেই থেকেই যায়। এনপিসিআইয়ের দাবি, নতুন ব্যবস্থায় সেই সমস্যা আর থাকবে না। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও ‘এগ্রিগেটর’ সংস্থাগুলিকে নিয়ে তাদের তৈরি সার্বিক মঞ্চ (ভারত বিল পেমেন্ট সিস্টেম বা বিবিপিএস) ব্যবহার করে এক জায়গা থেকেই মিটিয়ে ফেলা যাবে প্রায় যাবতীয় বিল। সেই জায়গা নথিভুক্ত কোনও ব্যাঙ্কের শাখা হতে পারে বা তার নেট ব্যাঙ্কিং। যে-সংস্থার বিল মেটাচ্ছেন, কোনও ব্যাঙ্ক বা এগ্রিগেটর সংস্থার সঙ্গে আলাদা ভাবে তার গাঁটছড়া আছে কি না, সেই বিষয়টি আর এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যার বিল মেটানো হচ্ছে, সেটি বিবিপিএসের আওতার কোনও একটি ব্যাঙ্ক বা এগ্রিগেটরের সঙ্গে যুক্ত থাকলেই হল।

ধরা যাক, ইউনাইটে়ড ব্যাঙ্ক বিবিপিএসে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সেখানে গিয়ে কিংবা তাদের নেট ব্যাঙ্কিংয়ে বিল জমা দেওয়া যাবে। আবার তেমনই একটি এগ্রিগেটর সংস্থা শহরের কোথাও কিয়স্ক চালু করলে, একসঙ্গে সব বিল জমার সুবিধা মিলবে সেখানেও।

এই পরিষেবা চালুর জন্য ইতিমধ্যেই ৫২টি ব্যাঙ্ক ও ১০টি ব্যাঙ্ক নয় এমন এগ্রিগেটর সংস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে সম্প্রতি ২৬টি ব্যাঙ্ক ও ১০টি ‘নন-ব্যাঙ্কিং’ সংস্থা এনপিসিআই-কে জানিয়েছে যে, তাদের পরিকাঠামো তৈরি। এনপিসিআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান স্বরজিৎ মণ্ডল জানান, এদের পরিকাঠামো আগামী কয়েক মাসে পরীক্ষা করা হবে। সফল হলে, চূড়ান্ত ছাড়পত্র। তাঁর আশা, আমজনতার জন্য বিবিপিএস চালু হবে নভেম্বরেই।

শীর্ষ ব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, বিল মেটাতে বছরে প্রায় ৬ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয় এ দেশে। তার প্রায় ৭০% নগদে। এনপিসিআইয়ের তথ্য অনুসারে, ফি মাসে প্রায় ৩০ লক্ষ বিল সশরীরে গিয়ে মেটান গ্রাহকরা। পুরো ব্যবস্থাই ছড়ানো-ছেটানো। এই ছবি পাল্টে সমস্ত পরিষেবার বিল এক জায়গায় মেটানোর পথ খুঁজতেই বিবিপিএসের মতো সার্বিক পরিকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মূল নকশা এনপিসিআইয়ের তৈরি। তারাই ‘ভারত বিল পেমেন্ট সেন্ট্রাল ইউনিট’ (বিবিপিসিইউ)। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও এগ্রিগেটর সংস্থার। তারা আবার ‘ভারত বিল পেমেন্ট অপারেশন ইউনিট’ (বিবিপিওইউ)। লেনদেন বাবদ আয় হবে গাঁটছড়া থাকা সংস্থাগুলিরও। আগামী দিনে স্কুল-কলেজের ফি থেকে শুরু করে ক্রেডিট কার্ডের বিল মেটানো পর্যন্ত বিভিন্ন লেনদেনও বিবিপিএসের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NPCI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE