Advertisement
E-Paper

ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির আঁচ কমাতেই সাবধানী রাজন

মূল্যবৃদ্ধি খাতায়-কলমে তলানিতে। সুদ কমানোর জন্য তাঁর উপর চাপ দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক ও শিল্পমহলও এককাট্টা। কিন্তু আপাতত সেই ‘লোভ সামলে’ সামনের দিকেই নজর রাখতে চান ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে দমিয়ে রাখতে চান মূল্যবৃদ্ধিকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৪২

মূল্যবৃদ্ধি খাতায়-কলমে তলানিতে। সুদ কমানোর জন্য তাঁর উপর চাপ দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক ও শিল্পমহলও এককাট্টা। কিন্তু আপাতত সেই ‘লোভ সামলে’ সামনের দিকেই নজর রাখতে চান ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে দমিয়ে রাখতে চান মূল্যবৃদ্ধিকে। তাই তিনি এখনই সুদ কমানোর তেমন পক্ষপাতী নন বলেই ঋণনীতির এক সপ্তাহ আগে ইঙ্গিত দিলেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের অফিসাররা।

তাঁদের মতে এর কারণ, এর পরের দফায় মূল্যবৃদ্ধির গতিবিধি কেমন হবে, এখনও তা স্পষ্ট নয়, তবে তা বাড়ার আশঙ্কাই রয়েছে। আর, মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা কম থাকলে তবেই সুদ কমাতে পারে আরবিআই। ফলে দেখেশুনেই পা ফেলতে চান সাবধানী রাজন। লক্ষ্য কম হারে মূল্যবৃদ্ধিকে থিতু রাখা। এবং তা বেশ কিছুটা সময়ের জন্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ২৯ সেপ্টেম্বর ঋণনীতি ফিরে দেখতে বসার আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অতীত ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখেছেন রাজন। তাই পূর্বসূরি ডি সুব্বারাওয়ের মতো ‘ফাঁক পেলেই সুদ ছাঁটাই’ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন তিনি। প্রসঙ্গত, বিশ্ব জুড়ে মন্দার মেঘ ঘনিয়ে আসার পরে শীর্ষ ব্যাঙ্কের তদানীন্তন গভর্নর সুব্বারাও ২০০৮ সালের জুলাইয়ের ৯ শতাংশ থেকে ২০০৯-এর এপ্রিলের মধ্যে এক ধাক্কায় রেপো রেট (যে-সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক আরবিআইযের কাছ থেকে স্বল্প মেয়াদে ধার নেয়) কমিয়ে আনেন ৪.৭৫ শতাংশে। সাময়িক ভাবে বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেও অচিরেই তার খেসারত দিতে হয় অর্থনীতিকে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি তৈরির সঙ্গে যুক্ত অফিসাররা এই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছেন, কম সুদের জমানায় বাড়তি চাহিদার চাপে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মূল্যবৃদ্ধি। ক্রমে তা ১০% ছাড়িয়ে গেলে বাধ্য হয়েই পিছু হটে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ২০১১-র অক্টোবরের মধ্যেই রেপো রেট ফিরে যায় আগেকার হারের খুব কাছাকাছি, ৮.৫০ শতাংশে।

এর দু’বছর বাদে ২০১৩ সালে আরবিআইয়ের রাশ হাতে নেওয়ার পর থেকে রঘুরাম রাজনকেও লড়তে হয়েছে সেই ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া মূল্যবৃদ্ধির সরীসৃপের সঙ্গে। যুদ্ধ জেতার মুখে তাই হার মানতে নারাজ তিনি। এখন মূল্যবৃদ্ধি কম আছে দেখেই সন্তুষ্ট নন রাজন। মূল্যবৃদ্ধিকে তিনি বেঁধে রাখতে চান ভবিষ্যতেও, যাতে কয়েক দশক ধরে দামের ওঠা-পড়ায় নাজেহাল দেশের অর্থনীতির প্রকৃত হাল ফেরানো সম্ভব হয়। দীর্ঘ মেয়াদে রাজনের লক্ষ্য মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে বেঁধে রাখা, যে-সম্ভাবনা এখনও তৈরি হয়নি বলেই মনে করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

পণ্য মূল্য কম থাকার কারণেই পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার নেমে গিয়েছে শূন্যের নীচে। অর্থাৎ জিনিসপত্রের দাম কমছে। খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও নেমে এসেছে ৩.৬৬ শতাংশে। যা দেখেই রাজনকে সুদ কমাতে জোরাজুরি করছে শিল্পমহল। খোলাখুলি চাপ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারও। তাদের ধারণা রেপো রেট এখনকার ৭.২৫ শতাংশে থাকাটা বৃদ্ধির গতি বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট বেশি। কিন্তু রাজন গত সপ্তাহেই বলেছেন, এই হাত গত বছরের চড়া হারের ভিত্তিতে হিসাব করা। তা না-হলে মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়াত ৫.৫ শতাংশের মতো। আরবিআই অফিসারদের সূত্রের খবর, এই কারণে নিজের মতেই সোজা পথে চলতে চান রাজন। কারণ, শেষ পর্যন্ত কিছুটা ঘাটতি বর্ষার জেরে শস্যের দাম চড়লে বা বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বাড়ার মুখ নিলেই এই আপাত স্বস্তির ছবি বদলে যেতে দেরি হবে না।

RBI rate cuts pressure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy