খানিকটা হলেও প্রাণ ফিরেছে গাড়ি শিল্পে
পুলওয়ামায় হামলা ও তার প্রত্যাঘাত হিসেবে পাকিস্তানে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান ঘিরে আচমকা যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ে বেশ খানিকটা নামতে দেখা গিয়েছে শেয়ার বাজারকে। তবে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অস্থিরতা প্রাথমিক ভাবে যে ধাক্কা দিয়েছিল, তা সামলে নিতে সূচক তেমন সময় নেয়নি। যদিও বাজারে অনিশ্চয়তা এখনও রয়েছে। সাম্প্রতিক অনেক খবরে তা আগামী দিনেও বহাল থাকার সম্ভাবনা ষোলো আনা। বিশেষত লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে। রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় অনেকেই হয়তো এই বাজারে বড় লগ্নির ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। অর্থাৎ অনিশ্চয়তা এবং ওঠাপড়া চলবে নতুন সরকার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত।
কাজেই লগ্নিকারীদের আপাতত পা ফেলতে হবে বেশ সতর্ক হয়ে, ভেবেচিন্তে। শক্তিশালী সরকার এবং ভাল বর্ষা পেলে দেশ ফের অগ্রগতির পথে হাঁটবে বলে মনে করা হচ্ছে। তখন নতুন করে শক্তি পাবে বাজার।
সীমান্তে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হওয়ায়, ফের বাজারের নজর ঘুরেছে অর্থনীতির দিকে। গত সপ্তাহে শিল্প-বাণিজ্য মহল থেকে যে সব খবর পাওয়া গিয়েছে, তার সবটা ভাল নয়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভাল মন্দের সেই ছবি—
• তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৬%, যা আগের পাঁচ ত্রৈমাসিকের মধ্যে সব থেকে কম। বছরের শেষ তিন মাসে বৃদ্ধি আরও কমে ৬.৪ শতাংশে নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের পূর্বাভাস, গোটা বছরে তা কমে হতে পারে ৭%। ভোটের মুখে এ খবর মোদী সরকারের জন্য সুখবর নয়।
• জানুয়ারিতে পরিকাঠামো শিল্প বেড়েছে ১.৮%, যা আগের বছর একই মাসে বেড়েছিল ৬.২% হারে। ভাল রকম কমেছে কয়লা, তেল শোধন, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে বৃদ্ধির হার। তা বেড়েছে ইস্পাত শিল্পে।
• জানুয়ারিতে জিএসটি আদায় হয়েছিল ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ছুঁয়েছে ৯৭,২৪৭ কোটি। আয় কমায় চাপ বাড়ল সরকারি কোষাগারে।
• ভোটের মুখে বিভিন্ন খাতে খরচ করছে সরকার। অন্তর্বর্তী বাজেট হলেও, সম্প্রতি এ বার তাতে একগুচ্ছ আর্থিক সুবিধার কথা ঘোষণা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারকে বইতে হবে নির্বাচনের বিশাল খরচ। এতেও মৃদু ধাক্কা আসতে পারে অর্থনীতির উপরে। আগামী দু’মাস লগ্নিকারীদের নজর থাকবে এই সব কিছুর উপরেও।
• এই অবস্থায় কিছুটা আশার আলো দেখিয়ে গত মাসে নিক্কেই ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজ়িং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) জানুয়ারির ৫৩.৯% থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪.৩%। কারখানায় উৎপাদনের এই হিসেব ছাপিয়ে গিয়েছে আগের ১৪ মাসের পরিসংখ্যানকে। এর অর্থ, দেশে চাহিদা ও উৎপাদন বাড়ছে।
• খানিকটা হলেও প্রাণ ফিরেছে গাড়ি শিল্পে (দেখে নিন সঙ্গের সারণি)। ফেব্রুয়ারিতে অন্তত কিছু সংস্থার বিক্রি মাথা তুলেছে।
• বেসরকারি আবহাওয়া অনুমান সংস্থা স্কাইমেটের পূর্বাভাস, এ বার দেশের স্বাভাবিক বর্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। এপ্রিলে আরও সঠিক ভাবে করা যেতে পারে সেই পূর্বাভাস।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy