হোলির উৎসবের আমেজ এ বছর ছড়িয়ে পড়তে পারে শেয়ার-বন্ড-টাকার বাজারে।
ভোট বাক্সে বিজেপিকেই ঢালাও সমর্থন করেছেন উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের জনগণ। মণিপুর, গোয়াতেও তারা জোট বেঁধে সরকার গড়ার পথে। নরেন্দ্র মোদীর প্রতি মানুষের ভরসাই মূলধনী বাজারে হোলির আনন্দ জিইয়ে রাখবে বলে ইঙ্গিত সংশ্লিষ্ট মহলের। সপ্তাহ শেষের ছুটি ও হোলির জন্য বন্ধ থাকার পরে আগামী কাল বাজার খুললেই তার আভাস মিলতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
বিরোধী শিবিরে ধস নামিয়ে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে বিজেপির ভোটযুদ্ধ জয়কে ২০১৯-এ দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় ফিরে আসার ইঙ্গিত হিসেবেই ধরছে মূলধনী বাজার। মোদীর হাত শক্ত হওয়াটা আর্থিক সংস্কারের পালে নতুন করে বাতাস জোগাবে বলে মনে করছে শিল্পমহলও। পাশাপাশি, রাজ্যসভায় বিজেপি-র জোর বাড়লে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাতেও সুবিধা হবে। আর, সংস্কারে ছেদ পড়বে না, এই আশাতেই বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি দেশের বাজারে নতুন উদ্যম নিয়ে ফিরবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি গত দু’মাসে প্রায় ১৩,৪০০ কোটি টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছে। এর পরে তারা আরও বড় আকারে লগ্নি শুরু করলে শেয়ারের পাশাপাশি প্রাণ ফিরে পাবে ঝিমিয়ে থাকা টাকার বাজার। কারণ, ডলার ভাঙিয়ে টাকায় রূপান্তরিত করেই ভারতে শেয়ার কেনে তারা। ইতিমধ্যেই শুক্রবার ডলারে টাকার দাম ছুঁয়েছে ৬৬.৫৬ টাকা, যা গত চার মাসে সবচেয়ে বেশি।
ভোটের রায় বন্ডের বাজারেও শক্তি জোগাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। গত পাঁচ মাস ধরেই ঝিমিয়ে রয়েছে এই বাজার। আসলে নোট-কাণ্ডের পরে ব্যাঙ্কগুলি জমা পড়া তহবিলের কিছু অংশ ইতিমধ্যেই সরকারি ঋণপত্র বা বন্ডে লগ্নি করেছে, যার জেরে বাড়ছিল বন্ডের চাহিদা ও তার দাম। কমছিল তার ইল্ড বা আয়। কারণ এই ধরনের বন্ডে সুদ বা কুপন রেট নির্দিষ্ট। সরকারি ঋণপত্র বা বন্ডের দাম বাড়ায় ওই ধরনের ১০ বছর মেয়াদি বন্ডে কমেছে আয়। এ বার টাকার চাহিদা বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি উল্টো পথে হেঁটে বন্ড বিক্রি করলে বন্ডের উপর আয় এক ধাক্কায় ৩ থেকে ৪ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে যেতে পারে।
আগামী কালই মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ দু’দিনের বৈঠকে বসছে। সেখানেই সুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তাই ভারতের বাজার কিছুটা সাবধানী। তবে রয়টার্সের সমীক্ষায় ইঙ্গিত, এক বছরে ভারতে শেয়ারের দাম ও আয়ের গড় অনুপাত দাঁড়াবে ১৯.৮৫। গত পাঁচ বছরের গড় ১৭.৮। মোদী হাওয়ায় ভর করেই শেয়ার-টাকা-বন্ডের বাজার নতুন উচ্চতা ছুঁতে পারে কি না, তা আন্দাজ করা যাবে আগামী কাল।