Advertisement
১১ মে ২০২৪
স্পেকট্রাম নিলাম শেষ • বিক্রি হয়নি ১১% • কেন্দ্রের ঘরে ১.১০ লক্ষ কোটি

মোবাইল মাসুল বাড়ার ইঙ্গিত

বুধবার শেষ হল স্পেকট্রাম নিলাম। প্রত্যাশা মতোই সেখান থেকে কেন্দ্রের ঘরে আসতে চলেছে প্রায় ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা। আর এই বিপুল পরিমাণ টাকা সরকারকে দেওয়ার খরচ কিছুটা তুলতে মোবাইল মাসুল হার বাড়ানো হতে পারে বলে এ দিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে টেলিকম শিল্প। জিএসএম সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল রাজন এস ম্যাথুজ এ দিন বলেন, নিলামে অংশ নিতে গিয়ে সংস্থাগুলির ভাঁড়ার থেকে প্রচুর অর্থ বেরিয়ে গিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:০০
Share: Save:

বুধবার শেষ হল স্পেকট্রাম নিলাম। প্রত্যাশা মতোই সেখান থেকে কেন্দ্রের ঘরে আসতে চলেছে প্রায় ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা। আর এই বিপুল পরিমাণ টাকা সরকারকে দেওয়ার খরচ কিছুটা তুলতে মোবাইল মাসুল হার বাড়ানো হতে পারে বলে এ দিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে টেলিকম শিল্প।

জিএসএম সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল রাজন এস ম্যাথুজ এ দিন বলেন, নিলামে অংশ নিতে গিয়ে সংস্থাগুলির ভাঁড়ার থেকে প্রচুর অর্থ বেরিয়ে গিয়েছে। তাই আগামী দিনে মাসুল না-বাড়িয়ে উপায় নেই। তবে তা খুব বেশি না-বাড়লে গ্রাহকদের উপর চাপ পড়বে না বলেই মনে করছে শিল্পমহল। যদিও তাদের বক্তব্য, বেশির ভাগ বড় সংস্থাই ঋণে জর্জরিত। ফলে সরকারকে টাকা দিতে ও পরিকাঠামো গড়তে অল্প হলেও মাসুল বাড়াতে হবে সংস্থাগুলিকে।

টানা ১৯ দিন ধরে ১১৫ রাউন্ড নিলাম চলার পরে, কোন সার্কেলে কোন স্পেকট্রাম কোন মোবাইল পরিষেবা সংস্থার ঘরে যাচ্ছে, তা অবশ্য বুধবার জানা যায়নি। কারণ, নিলামের কিছু শর্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা করেছে কয়েকটি মোবাইল পরিষেবা সংস্থা। সে ব্যাপারে জট কাটাতে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই বিক্রি হওয়া স্পেকট্রামের মালিকানা ঘোষণা করবে টেলিকম দফতর।

নিলামে শেষ পর্যন্ত ১১% স্পেকট্রাম কেনার জন্য দরপত্র জমা পড়েনি। যার ন্যূনতম দর ৮২,৩৯৫ কোটি টাকা। কিন্তু তা সত্ত্বেও, এ দিন দামের মোট যে অঙ্ক সামনে এসেছে, তা থেকে স্পষ্ট, স্পেকট্রাম নিতে কী ভাবে ঝাঁপিয়েছে মোবাইল সংস্থাগুলি। টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, ১৯ দিন নিলামের পর ১,০৯,৮৭৪ কোটি টাকার দরপত্র জমা পড়েছে কেন্দ্রের কাছে। যা ছাপিয়ে গিয়েছে ২০১০ সালে স্পেকট্রাম নিলামের ১.০৬ লক্ষ কোটি টাকার পুরনো রেকর্ডও। সে বার বিএসএনএল, এমটিএনএলের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ৩০ হাজার কোটির দরপত্র জমা দিয়েছিল। অথচ এ বার পুরো টাকাটা এসেছে বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছ থেকে।

এ বার নিলামে অংশ নেয় ভারতী-এয়ারটেল, ভোডাফোন ইন্ডিয়া, আইডিয়া-সহ আটটি সংস্থা। দরপত্র চাওয়া হয় ৮০০, ৯০০, ১,৮০০, ২,১০০ মেগাহাৎর্জ ব্যান্ডের স্পেকট্রামের জন্য। এর মধ্যে কিছু সার্কেলে ২০১২ ও ২০১৩ সালে চাহিদা প্রায় না-থাকা ৮০০ মেগাহাৎর্জের (সি ডিএমএ) স্পেকট্রামের দর, মূল দামের দ্বিগুণ ছাপিয়ে গিয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে কম দর জমা পড়েছে থ্রি-জি স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে। কারণ, চড়া দর দিয়ে তা কিনে, অন্যান্য ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে চায়নি মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি।

এ দিন ভোডাফোন জানিয়েছে, আগামী দিনে গ্রাহকদের আরও ভাল পরিষেবা দেওয়াই সংস্থার লক্ষ্য। তবে কোন সার্কেলে কী ধরনের স্পেকট্রাম সংস্থার হাতে এসেছে, তা জানার পরেই নিলাম নিয়ে মুখ খুলবে তারা। এ দিকে, গত ক’মাসে মোবাইল পরিষেবার মানে যে অবনতি ঘটেছে, তা বুধবারও মেনে নিয়েছে টেলি শিল্প। সে কথা জানিয়ে প্রাক্তন এয়ারটেল কর্তা ও বর্তমানে মাইক্রোম্যাক্স চেয়ারম্যান সঞ্জয় কপূর বলেন, আগামী দিনে সংস্থাগুলির লক্ষ্যই হওয়া উচিত পরিষেবার মান উন্নত করা। সে জন্য পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া উচিত বলেও তাঁর দাবি।

অবশ্য এ সবের মাঝেও, আক্ষরিক অর্থেই পোয়াবারো কেন্দ্রের। কারণ, নিলাম থেকে দীর্ঘ মেয়াদে এমন বিপুল অঙ্ক পেলে রাজকোষ ঘাটতিকে বেঁধে রাখতে সুবিধা হবে। এই ১.১০ লক্ষ কোটির মধ্যে চলতি অর্থবর্ষে কত টাকা আসবে, তা অবশ্য নিশ্চিত করে বলেননি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর আশা, নিলামের ফল চূড়ান্ত হলে সংস্থাগুলি দ্রুত তাদের প্রদেয় অর্থের কিছু অংশ কেন্দ্রের কাছে জমা দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE