সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও পরিকাঠামোগত ত্রুটির অভাবে আগাম ঘোষণা সত্ত্বেও ভেস্তে গেল দেশ জুড়ে একসঙ্গে সব নিলাম কেন্দ্রে চায়ের বৈদ্যুতিন নিলাম ব্যবস্থার সূচনা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিবের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকে এই ব্যবস্থা চালুর কথা জানিয়েছিল টি বোর্ড। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত চা শিল্প-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে দেয় বোর্ড। এর ফলে প্রায় ২০০ কোটি টাকার চা নিলাম আটকে গেল।
এখন দেশের ছ’টি চা নিলাম কেন্দ্রের যে-কোনওটিতে অংশ নিতে হলে সেখানকার সদস্য হতে হয় ক্রেতাকে। চা লেনদেনে আরও স্বচ্ছতার যুক্তিতে সব কেন্দ্রকেই জু়ড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে কোনও কেন্দ্রের সদস্য না-হয়েও সেখানকার নিলামে অংশ নিতে পারতেন ক্রেতা।
একেবারে শেষ মুহূর্তে কেন পিছিয়ে আসতে হল বোর্ডকে? বোর্ডের একাংশের দাবি, চা শিল্পমহলের অনেকেরই এই ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি রয়েছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ চা শিল্পমহলের দাবি, তারা কখনওই নিলাম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়। তবে পরিকাঠামোগত ত্রুটি থাকলে কী কী সমস্যা হতে পারে তা শিল্পমহল আগেই বোর্ডের কাছে তুলেও ধরেছিল। কিন্তু বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কার্যত উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে।
এই ব্যবস্থার মূল সমস্যা বিভিন্ন রাজ্যের বিক্রয়কর বা ভ্যাট। নিলামের লেনদেনের পরে কী ভাবে করের বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে, তা স্পষ্ট নয় শিল্পের কাছে। আবার ‘ট্যাক্স ইনভয়েস’-এ কী কী তথ্য থাকা জরুরি (যেমন প্যান, টিআইএন নম্বর ইত্যাদি), সে সবের নথিও গত ডিসেম্বরে বোর্ডের কাছে দিয়েছিল তারা। কিন্তু গত শুক্রবার ‘মক টেস্ট’-এ দেখা যায় সে সব কিছু নেই। চালানেও ‘ট্যাক্স ইনভয়েস’ নম্বর ও ভ্যাট সংক্রান্ত তথ্য নেই। নিলাম ও নিলাম পরবর্তী লেনদেন প্রক্রিয়ায় সফটওয়্যারেও বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। নিলাম ব্যবস্থার ‘ব্রোকার’-দের মাসুল হার নিয়েও বোর্ডের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সূত্রের। যদিও চা শিল্পমহলের দাবি, সেই সব মাসুল হার বোর্ডই স্থির করেছিল।
টি অকশন বায়ার্স অ্যাসো -সিয়েশনের চেয়ারম্যান এল এম গুপ্ত এ দিন বলেন, ‘‘এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। টি বোর্ড অবশ্য সেগুলি মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’ বোর্ডের চেয়ারম্যান সন্তোষ যড়ঙ্গীরও দাবি, শিল্পমহলের মতামত নিয়ে সমস্যা মেটানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy