Advertisement
১০ মে ২০২৪
Landing Charge

বিমানের ল্যান্ডিং চার্জ বাড়ছে, দাম বাড়তে পারে টিকিটেরও

১৫ জুলাই থেকে সেটা ২০% বাড়বে। সংস্থাগুলির দাবি, এর ফলে বাড়বে টিকিটের দাম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

এ যেন মরার উপরে খাঁড়ার ঘা।

লকডাউনে টানা দু’মাস বসে থাকার পরে যখন বিশাল অঙ্কের লোকসানের মুখে উড়ান সংস্থাগুলি, ঠিক তখনই বাড়ানো হল সারা দেশের বিমানবন্দরে প্রতিটি বিমানের ল্যান্ডিং চার্জ। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সাধারণ একটি এয়ারবাস-৩২০ বিমান নামলে প্রতি বার ওই চার্জ লাগে ৩০,০০০ টাকা। ১৫ জুলাই থেকে সেটা ২০% বাড়বে। সংস্থাগুলির দাবি, এর ফলে বাড়বে টিকিটের দাম। অর্থাৎ পকেটে বাড়তি চাপ পড়ায় ভুগবেন সেই গ্রাহকই। করোনা ও লকডাউনের কামড়ে রুজি-রোজগারের অনিশ্চয়তা এমনিতেই যন্ত্রণা বাড়িয়েছে যাঁদের।

এক উড়ান সংস্থার কর্তার কথায়, ‘‘মাত্র ৩৩% উড়ান চালানোর অনুমতি মিলেছে। এক একটি রাজ্যের এক এক রকম নিয়মে তা-ও চালানো যাচ্ছে না। অসমে লকডাউন বলে গুয়াহাটির উড়ান কমেছে। কলকাতা থেকে ছ’টি শহরে পরিষেবা বন্ধ।’’ একাংশের দাবি, কলকাতায় আসার ক্ষেত্রে ৭০% যাত্রী পাওয়া গেলেও, এখান থেকে রওনা দিচ্ছেন ৪০-৫০%। দেশের অন্যত্রও তেমন যাত্রী নেই। ফলে টিকে থাকতে হলে লোকসান আটকাতে হবে। আর সে জন্য টিকিটের দাম বাড়ানো ছাড়া রাস্তা নেই।

বস্তুত, টিকিটের দাম এখন হু হু করেই বাড়ছে। কলকাতা থেকে বুধবার বাগডোগরার টিকিট ছিল ৬০০০ টাকা। ভুবনেশ্বর ৭৫০০, হায়দরাবাদ ৮০০০। উড়ান সংস্থাগুলির দাবি, ল্যান্ডিং চার্জ ২০% বাড়লে বাড়তি খরচ যাত্রীদের থেকেই তোলা হবে। ফলে টিকিটের দাম আরও চড়বে।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে লগ্নির নির্দেশ, আশঙ্কা তবুও

তাদের অভিযোগ, যা চাওয়া হয়েছিল হল তার উল্টোটা। আর্থিক সঙ্কট থেকে বাঁচতে বিমানবন্দরের সব চার্জ কমানোর আর্জি জানিয়েছিল তারা। কারণ, একেই লকডাউনে বিপুল ব্যবসা খোয়াতে হয়েছে। এখনও যাত্রী চলাচল কম। তার উপরে জ্বালানির দাম বাড়ায় সাম্প্রতিক কালে খরচ বেড়েছে প্রচুর।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, লকডাউনে তাঁদেরও কম ক্ষতি হয়নি। কলকাতায় আগে যেখানে মাসে ১১৮ কোটি টাকা রোজগার হয়েছে, সেখানে গত মাসে তা নেমেছে ২৫ কোটিতে। তার উপরে, যে তেল সংস্থাগুলি বিমানে জ্বালানি ভরে, তাদের এক কিলোলিটার জ্বালানির উপরে ‘অয়েল চার্জেস’ দিতে হতো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। এক মামলায় সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিমানবন্দর ওই টাকা নিতে পারবে না। এ সবের জেরে লোকসানের মুখে পড়াতেই সম্প্রতি রক্ষণাবেক্ষণ খাতে খরচ কমানোর নির্দেশ এসেছে, দাবি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।

তাঁদের এক কর্তার কথায়, ‘‘এতে আমাদের ক্ষতি হতে শুরু করে। তখনই ঠিক হয় সেই লোকসান সামাল দিতে ল্যান্ডিং চার্জ বাড়ানো হবে। সেই মতো আবেদন করা হয়েছিল। কেন্দ্রের অধীনে বিমানবন্দর আর্থিক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (এরা) এ মাসেই জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ওই অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া যাবে।’’

বিপাকে এয়ার ইন্ডিয়া

• সারা ভারতে পরিষেবা খাতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া বাকি ফেলেছে মোট ২১০০ কোটি টাকা।

• এর মধ্যে ল্যান্ডিং, পার্কিং চার্জ, অফিস ভাড়া রয়েছে। ইউজ়ার্স ডেভেলপমেন্ট ফি-ও বকেয়া।

• বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে এয়ার ইন্ডিয়াকে ধারে কোনও পরিষেবা দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, নগদ টাকা মেটালে, তবেই বুধবার সকাল থেকে দেশের বিমানবন্দরগুলিতে পরিষেবা পাবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Landing Charge Flights
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE