নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করছেন অধিয়া। সোমবার। ছবি: পিটিআই
পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিলে রাষ্ট্রপতি সায় দেওয়ার পরে আর কালবিলম্ব করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত ৮ সেপ্টেম্বর ওই সংশোধনী অনুমোদন করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার চার দিন বাদেই আজ পণ্য-পরিষেবা কর পরিষদ (জিএসটি কাউন্সিল) গড়ায় সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। চলতি মাসের ২২ ও ২৩ তারিখে পরিষদের প্রথম বৈঠকও ডেকেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। লক্ষ্য, সামনের বছর ১ এপ্রিল থেকে দেশ জুড়ে জিএসটি চালু করা।
সংসদের গত অধিবেশনে জিএসটির সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করানোর পরে কেন্দ্রের কাছে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ এই করের হার নির্ধারণ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত এই পরিষদই কাজটি করবে। যেখানে কেন্দ্রের থাকবে এক-তৃতীয়াংশ ভোট। আর সব রাজ্য মিলিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটাধিকার। কোনও প্রস্তাব পাশ করাতে চার ভাগের তিন ভাগের সমর্থন লাগবে।
নিজেদের রাজস্বের কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ রাজ্যই চায় জিএসটির হার বাঁধা হোক ১৮ শতাংশের উপরে। শিল্পমহলের একটি বড় অংশের দাবি, সিংহভাগ সামগ্রীতে কর বসুক ১৮% হারেই। আজ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব হাসমুখ অধিয়া বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমরা জিএসটি নিয়ে নির্ধারিত সময়সীমার চেয়ে এগিয়ে আছি।’’ সরকারের বক্তব্য, সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশের পরে তৎপরতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ১৬টি রাজ্য নিজেদের বিধানসভায় এটি পাশ করিয়ে নিয়েছে। সেখানে শুধু বিজেপি শাসিত রাজ্যই নয়, নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়ক, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও তড়িঘড়ি এটি পাশ করিয়ে নিয়েছেন। ফলে রাষ্ট্রপতির দ্রুত সম্মতি পেতেও অসুবিধা হয়নি। এ বারে করের হার নির্ধারিত হয়ে গেলে বাকিটাও সময় মাফিক রূপায়ণ করা সহজ হবে বলে দাবি কেন্দ্রের। অধিয়া জানান, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা গুটিয়ে এনে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার জন্য পরিষদের সামনে দু’মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর, এই সময়সীমাই এর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, এই পরিষদ শুধু করের হার নয়, কোথায় কত ছাড় দেওয়া হবে, সর্বোচ্চ সীমা কী হবে, সেগুলিও নির্ধারণ করবে। পরিষদের পাশাপাশি জিএসটি সচিবালয় গঠন করা হয়েছে, যারা এটি রূপায়ণ করবে।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, সব রাজ্যকে সঙ্গে নিয়েই এই বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলা হবে। তাতে সব দলের প্রতিনিধিরাই থাকবেন। ফলে সেখানে সহমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সংসদে অন্য দলের আপত্তির সুযোগ থাকবে না। একবার এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে আরও এগিয়ে আনা হতে পারে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সাধারণত, নভেম্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে শুরু হয় এই অধিবেশন। শেষ হয় ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে। সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই অধিবেশন বসতে পারে। এ বার উৎসবের মরসুমও আগে শেষ হচ্ছে। তারপর অধিবেশন ডেকে দ্রুত কেন্দ্রীয় জিএসটি আইন ও সংযুক্ত জিএসটি আইনটি পাশ করানোর চেষ্টা করতে চাইছে কেন্দ্র। যে কারণে সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে কেরলে বিজেপির জাতীয় পরিষদের বৈঠক থাকলেও জেটলি এ নিয়ে একটি পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করেই দলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy