গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
গত বছর জানুয়ারির শেষে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কারচুপি করে সংস্থার শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগ করেছিল আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। আর তার ১৪ মাসের মাথায় এ বার গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে ভারতে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বদলে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমের খবর, যার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে আমেরিকার বিচার বিভাগ। তাদের আতসকাচের তলায় রয়েছেন খোদ গৌতম আদানিও। আদানি গোষ্ঠীর অবশ্য দাবি, কর্ণধারের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে তারা কিছু জানে না। সংস্থা সব রকম নিয়ম মেনে চলে, সেই দাবিও করেছে তারা। আদানিদের সঙ্গেই আর এক ভারতীয় অপ্রচলিত বিদ্যুৎ সংস্থা আজ়ুর পাওয়ার গ্লোবালের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
সূত্র জানিয়েছে, আদানি গোষ্ঠী এবং আজ়ুরের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট-এর আইনজীবীরা এবং ওয়াশিংটনে বিচার বিভাগের জালিয়াতি দমনকারী শাখা। মূলত অপ্রচলিত বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোনও সুবিধা পেতে ভারতের সরকারি কর্তাদের ঘুষ দেওয়া হয়েছে কি না, সেটাই তদন্তের বিষয়। সংস্থা ছাড়াও তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও রাখা হয়েছে এর আওতায়। যার মধ্যে রয়েছেন গৌতম আদানিও। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আমেরিকায় সরাসরি আদানিদের ব্যবসা না থাকলেও, সে দেশের লগ্নিকারীদের পুঁজি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় ছড়িয়ে রয়েছে। সে কারণেই নিয়ম মেনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের প্রশাসন।
হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ছিল, এক দশকেরও বেশি সময়ে ধরে শেয়ারের দামে কারচুপি করেছে আদানিরা। কর্ণধার গৌতম আদানির ১২,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৯.৯৬ লক্ষ কোটি টাকা) নিট সম্পদের ১০,০০০ কোটিই এসেছে তার আগের তিন বছরে, শেয়ার দরে কারচুপি করে। মরিশাস, আরব আমিরশাহীর মতো দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন চালানো হয়েছে। এর অন্যতম কারিগর গৌতমের দাদা বিনোদ আদানি। রিপোর্ট প্রকাশের পরে গোষ্ঠীর প্রায় ১৫০ কোটি ডলার শেয়ারমূল্য মুছে গিয়েছিল। ধনীতম ভারতীয়ের তকমা হারান গৌতম। তদন্তে নামে সেবি। মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে অবশ্য রায় যায় আদানিদের পক্ষে।
আদানি গোষ্ঠী অবশ্য বরাবরই এই রিপোর্ট অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এই ঘটনা আসলে ‘ভারত, দেশের প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক বৃদ্ধির উপরে আক্রমণ’। গৌতমের অভিযোগ ছিল, তাঁর গোষ্ঠীর ভাবমূর্তি নষ্টের ‘দূরভিসন্ধি’ নিয়েই কারচুপির অভিযোগ করে রিপোর্ট এনেছিল হিন্ডেনবার্গ। শেয়ার দরে পতন ঘটিয়ে মুনাফা কামানোই ছিল যার উদ্দেশ্য। এ বার আমেরিকার বিচার বিভাগের তদন্তের রেশ কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই তাকিয়ে সব মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy