আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে কমানো হবে খাদ্যশস্য ভরতে চটের বস্তার বাধ্যতামূলক ব্যবহার। মঙ্গলবার দিল্লিতে বস্ত্র মন্ত্রকের সচিব সঞ্জয় কুমার পণ্ডার নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বছরে ৫% করে সংরক্ষণ কমানো হবে। তবে সংরক্ষণ এ বছর একই থাকছে, যা রাজ্যের শিল্পমহলের কাছে কিছুটা স্বস্তির।
এ দিন বৈঠকে সাফ জানানো হয়, আগামী ৩ বছরের মধ্যে এই সংরক্ষণের ক্ষেত্রে জেপিএম আইনটিই (জুট প্যাকেজিং মেটেরি -য়ালস কম্পালসরি ইউজ ইন প্যাকিং কমোডিটিজ অ্যাক্ট, ১৯৮৭) কার্যত অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলা হবে। কারণ, খোলা বাজারের নীতির সঙ্গে এ ধরনের সংরক্ষণ খাপ খায় না। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, পঞ্জাব, অন্ধ্র প্রদেশ, হরিয়ানার অফিসারেরা। যোগ দেন কেন্দ্রীয় অর্থ, কৃষি, খাদ্য সরবরাহ, রসায়ন, ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের অফিসারেরাও। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন দিল্লির রেসিডেন্ট কমিশনার রামদাস মীনা ও শ্রম দফতরের সচিব অমল রায়চৌধুরী। ছিলেন পাট কমিশনের অফিসার ও চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র প্রতিনিধিরাও।
তবে রাজ্যকে সেখানে ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে। কেন্দ্রের অভিযোগ, পাট এ রাজ্যের অন্যতম প্রধান শিল্প হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ খাদ্যশস্য সংগ্রহে চটের বস্তা ব্যবহার করে না। তাই তার এই শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলা সাজে না।
কেন্দ্রের বক্তব্য, দীর্ঘ সাতাশ বছর সংরক্ষণের আওতায় রেখে পাটশিল্পকে উন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ বার তাকে প্রতিযোগিতায় নেমেই বাঁচতে হবে। এত দিন বস্তার মাপ ও ওজন অনুযায়ী গানি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (জিটিএ) দাম স্থির করত। কেন্দ্রীয় এজেন্সি ডিরেক্টর জেনারেল অব সাপ্লাই অ্যান্ড ডিসপোজালস (ডিজিএসডি) সেই দামেই বস্তা কিনতে বাধ্য হত। কেন্দ্রের সমীক্ষা অনুযায়ী, বাজারের চেয়ে জিটিএ-র দাম অনেক বেশি। ফলে এখন থেকে বাজারের দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বস্তার দাম স্থির করবে ডিজিএসডি। বৈঠকে কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ, রসায়ন-পেট্রো রসায়ন মন্ত্রক এবং পঞ্জাব সরকারের প্রতিনিধিরা দাবি করেন, চটের বস্তার সংরক্ষণ কমিয়ে প্লাস্টিক বস্তা কেনার অনুমতি দেওয়া হোক। কারণ, চটের বস্তার দাম বেশি, জোগানও যথেষ্ট নয়।
এ দিকে, বৈঠকে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলিকে ডাকা উচিত ছিল বলে অভিযোগ এনেছেন এআইটিইউসির দিলীপ ভট্টাচার্য। গত ৪ তারিখ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় শ্রম সচিবের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা চটশিল্পে শ্রমিকদের দুর্দশার কথা জানিয়ে আসেন। এ নিয়ে ২২টি ইউনিয়ন ২৬ নভেম্বর চটশিল্পে ধর্মঘটও করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy