জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ারের (জেএসপিএল) হাতে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া তিনটি কয়লা ব্লক নিলামের তালিকা থেকে বার করে আনার নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট। নবীন জিন্দলের সংস্থাটিকে স্বস্তি দিয়ে আদালত তার এই গুরুত্বপূর্ণ রায়ে কড়া ভাষায় জানিয়েছে, বিদ্যুৎ শিল্পের প্রয়োজনের কথা ভেবে বণ্টন সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি খনি ফেরাতে বললেও, এ ক্ষেত্রে ‘ইস্পাত শিল্পের ক্ষতি’-র দিকটি বিবেচনা করা হয়নি।
এ দিন বিচারপতি বদর দুরেজ আহমেদ এবং সঞ্জীব সচদেবের ডিভিশন বেঞ্চ এই যুক্তি দিয়ে আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রের ২০১৪-র কয়লা খনি (বিশেষ ব্যবস্থা) সংক্রান্ত দ্বিতীয় অর্ডিন্যান্সে কোথাও বলা হয়নি, ইস্পাত ও অন্যান্য শিল্পের তুলনায় বিদ্যুৎকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তা ছাড়া, সরকার শক্তি সংক্রান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে খনিগুলি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে দিতে চাইলেও, তা এখানে খাটে না। কারণ, ওই নিরাপত্তা আসলে কয়লার মজুত ভাণ্ডার সংক্রান্ত, বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পর্কিত নয়। কয়লা ছাড়াও জল, বায়ু, পরমাণু, সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়।
যে-তিনটি কয়লা ব্লককে আসন্ন নিলাম থেকে সরিয়ে রাখার রায় দিয়েছে আদালত, সেগুলি হল: ওড়িশার উৎকল বি১ ও উৎকল বি২ এবং ছত্তীসগঢ়ের গারে পালমা চার/৬। তবে এর জন্য চলতি মাসে নির্ধারিত ৪৬টি কয়লা ব্লকের নিলাম পিছিয়ে যাবে না বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বিশেষজ্ঞ কমিটিও এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি জেএসপিএল-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলা হয়েছে: “আমরা নিশ্চিত নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গড়া কেন্দ্রীয় সরকার বুঝতে পারবে, ওড়িশা ও ছত্তীসগঢ়ে আমরা কোন ব্লকের কয়লা কী ভাবে কাজে লাগাতে চাইছি। কয়লার সদ্ব্যবহার এবং প্রকল্পগুলির বিপুল কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার কথা কেন্দ্র মাথায় রাখবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট ২১৪টি কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিল করলে জিন্দলদের ওই তিনটি খনিও তার আওতায় পড়ে যায়।
এ দিনের রায়ের উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল:
• উৎকল বি১ ও উৎকল বি২ এবং গারে পালমা চার/৬-এর কয়লা বিদ্যুৎ শিল্প ছাড়া কাজে না-লাগানোর সরকারি নির্দেশ খারিজ
• উৎকল বি১, উৎকল বি২ মেশানো যাবে না
• পুরো বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ কমিটি
ওই কমিটি উৎকল বি১ এবং উৎকল বি২ মেশানোর কথা বললেও, ঠিক মতো বিচার-বিবেচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে আদালত। এ দিকে, বিদ্যুৎ শিল্প ছাড়া অন্যত্র খনি তিনটির কয়লা ব্যবহার করা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আসন্ন নিলামে দরপত্রও দিতে পারেনি জেএসপিএল। অথচ সংস্থা জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট খনির কাছাকাছি কারখানা গড়তে তারা ইতিমধ্যেই ২৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঢেলেছে। আদালত হস্তক্ষেপ না-করলে যা জলেই যেত বলে জানিয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy