প্রস্তাবিত নতুন আইনে কর্মীদের বোনাসের ঊর্ধ্বসীমা ৬,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। পাশাপাশি, মাসে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান, এমন কর্মীদের বোনাসের আওতায় আনতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে যাঁরা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান, শুধুমাত্র তাঁরাই বোনাস পাওয়ার যোগ্য এবং সেই বোনাসের সর্বোচ্চ সীমা ৩৫০০ টাকা। ২০১৩-র নভেম্বরের ভোগ্যপণ্য মূল্য সূচকের ভিত্তিতে এই সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। শেষ বার বোনাস আইন সংশোধিত হয়েছিল ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসের মূল্য সূচকের ভিত্তিতে।
আইন সংশোধনের ব্যাপারে সংসদীয় কমিটির ওই প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখতে আজ বুধবারই মালিক পক্ষ এবং ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী গোষ্ঠী। বৈঠকে যে ৬টি কেন্দ্রীয় শ্রম ইউনিয়ন উপস্থিত থাকবে তার মধ্যে রয়েছে বিএমএস, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, এইচ এম এস, সিটু এবং এআইইউটিইউসি।
বোনাস পাওয়ার যোগ্যতা এবং তার সর্বোচ্চ সীমা সংক্রান্ত দু’টি ক্ষেত্রেই টাকার অঙ্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও, বোনাস হিসাব করার নিয়ম, অর্থাৎ বেতনের যত শতাংশ এই খাতে দেওয়া হয়, তার কোনও পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়নি। ফলে নয়া আইনেও আগের মতোই সর্বনিম্ন ক্ষেত্রে বেতনের ৮% এবং সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে ২০% বোনাস দিতে হবে। পাশাপাশি, পুরনো আইনের মতো প্রস্তাবিত নতুন আইনেও ২০ জনের কম কর্মী আছেন, এমন সংস্থাকে বোনাস আইনের বাইরেই রাখা হয়েছে।
এ দিকে ট্রেড ইউনিয়নগুলি সংসদীয় কমিটির বোনাস আইন সংক্রান্ত সুপারিশের বিরোধিতা করছে। তাদের দাবি, বোনাসের ঊর্ধ্বসীমাই তুলে দিতে হবে। বিএমএসের সভাপতি বৈজনাথ রায় বলেন, “সরকার যখন মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে পারছে না, তখন বোনাসের ঊর্ধ্বসীমা রাখারও যুক্তি নেই।”
একই দাবি করে আইএনটিইউসির সর্বভারতীয় সম্পাদক রমেন পান্ডের অভিযোগ, “ওই ঊধ্বর্র্সীমা সিংহভাগ শ্রমিক-কর্মচারীকে বোনাস পাওয়া থেকে বঞ্চিত করার কৌশল ছাড়া কিছু নয়। কারণ, মূল্য সূচক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় বেতন বেড়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা দ্রুত বোনাস আইনের বাইরে চলে যাচ্ছেন।”
সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বিরোধিতার কারণ প্রসঙ্গে এসইউসিআইয়ের শ্রম সংগঠন এআইইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা বলেন, “বর্তমান আইনে যে-সব সংস্থায় ২০ জনের কম কর্মচারী কাজ করেন, সেগুলি বোনাস আইনের আওতার বাইরে রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষা থেকেই দেখা গিয়েছে, দেশের মোট শ্রমিক-কর্মচারীর মধ্যে ৭০ শতাংশই বোনাস আইনের আওতায় পড়ছেন না। অথচ এক দিকে প্রযুক্তির উন্নতি, আর অন্য দিকে বাইরের লোক দিয়ে কাজ করানোর (আউটসোর্সিং) প্রবণতা বাড়ার কারণে ক্রমশ ২০ জনের কম লোকের সংস্থার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই আমরা চাই, এই আইনটিও সংশোধন করে কর্মী সংখ্যা নির্বিশেষে সব সংস্থাকেই বোনাস আইনের আওতায় আনা হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy