Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tangra

এলাকার একমাত্র খেলার মাঠের গেটই মরণফাঁদ

ট্যাংরার ডি সি দে রোডে রয়েছে ধোবিয়াতলা। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিল খালি মাঠ। মাস তিনেক আগে কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার ঠিক করেন মাঠ ঘিরে সৌন্দর্যায়ন করবেন। পাশে তৈরি হবে শিশু উদ্যান। সেই মতো কাজ শুরু হয়। পাঁচিলের উপরে রেলিং দিয়ে ঘিরে বসানো হয়েছিল দু’পাল্লার বড় লোহার গেট।

মর্মান্তিক: মাঠের এই গেট ভেঙে পড়েই মৃত্যু হয় সুশীলা হালদােরর। শনিবার, ট্যাংরায়। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: মাঠের এই গেট ভেঙে পড়েই মৃত্যু হয় সুশীলা হালদােরর। শনিবার, ট্যাংরায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৩
Share: Save:

স্থানীয় বড় মাঠ বলতে একটাই। ধোবিয়াতলা মাঠ। অথচ এলাকায় অসংখ্য শিশুর বাস। বাড়ি বলতে এক কামরার ছোট ছোট ঘর। তাই বস্তির বেশির ভাগ বাচ্চাই সারাদিন ভিড় করে থাকে এই মাঠে। শনিবার বিকেলে ট্যাংরার রেলিং ঘেরা ধোবিয়াতলার সেই মাঠেই গেট পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন স্থানীয়েরা।

ট্যাংরার ডি সি দে রোডে রয়েছে ধোবিয়াতলা। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিল খালি মাঠ। মাস তিনেক আগে কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার ঠিক করেন মাঠ ঘিরে সৌন্দর্যায়ন করবেন। পাশে তৈরি হবে শিশু উদ্যান। সেই মতো কাজ শুরু হয়। পাঁচিলের উপরে রেলিং দিয়ে ঘিরে বসানো হয়েছিল দু’পাল্লার বড় লোহার গেট। তবে সেটি তালা দেওয়া থাকত। পিছনে একটি ছোট গেট রয়েছে। সেটি দিয়ে সংলগ্ন মুসলিম ক্যাম্প এবং নয়া বস্তিতে ঢোকা যায়। স্থানীয় কাউন্সিলরের দাবি, পিছনের গেটও তালা দেওয়া থাকে। ঠিক হয়েছিল, মাঠে ঘাস বসিয়ে খুলে দেওয়া হবে গেট। কিন্তু বস্তির বাচ্চারা পিছনের গেট টপকে মাঠে ঢুকে খেলাধুলো করত। সে ভাবেই খেলতে গিয়ে এ দিন দুপুরে গেট ভেঙে পড়ে যায় সুশীলা হালদার নামে বছর এগারোর এক বালিকার উপরে। মৃত্যু হয় নয়া বস্তির ওই বাসিন্দার। আহত হয় আর এক শিশু মহম্মদ শাহনওয়াজ।

দুর্ঘটনার পরে এ দিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, মাঠে তখনও স্থানীয় মহিলা ও বাচ্চারা ভিড় করে রয়েছেন। মাঠে পড়ে থাকা একটি রক্তমাখা ওড়না দেখিয়ে তাঁরাই জানালেন, সেটি সুশীলার। পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন পিছনের নয়া বস্তিতে।

গলির মুখে বাচ্চা কোলে বসে রয়েছেন সুশীলার মা আরতি হালদার। তখনও তাঁর চোখে-মুখে ঘোরের ছাপ স্পষ্ট। তাঁকে ভিড় করে ঘিরে রয়েছেন স্থানীয়েরা। সুশীলার কথা জিজ্ঞাসা করতে ঘোরের মধ্যে তিনি বলে চলেন, ‘‘বছর দশেক আগে সুশীলা যখন আমার পেটে তখন স্বামী ছেড়ে চলে যায়। পরিচারিকার কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালাই। বড় মেয়ের কাছে ছোট মেয়েকে রেখে কাজে যাই। আজও তেমনই গিয়েছিলাম। ফিরে এসে শুনলাম সুশীলা খেয়ে মাঠে গিয়েছে। কিছু ক্ষণ পরেই গেট খুলে পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে যখন ছুটে গেলাম, দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটা পড়ে রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tangra Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE