—ফাইল চিত্র।
একটি নয়, শুক্রবার দমদম মেট্রো স্টেশনে রেলরক্ষী বাহিনীর জওয়ানের রাইফেল থেকে দু’টি কার্তুজ বেরিয়েছিল। তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে দু’টি কার্তুজের খোল উদ্ধার করা হয়েছে, ঘটনাস্থলে তিনটি জায়গায় গুলি লাগার চিহ্ন মিলেছে। তার মধ্যে দু’টি মাটিতে কয়েক ফুটের ব্যবধানে, অন্যটি পাশের একটি দেওয়ালে।
শুক্রবার বেলা দু’টো নাগাদ ডিউটি বদলের সময়ে রেলরক্ষী বাহিনীর রাইফেল থেকে আচমকা গুলি ছিটকে যায়। আহত হন সঙ্গীতা বসু নামে এক মহিলা ও তাঁর ছেলে সপ্তর্ষি। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ডি কে মিনা নামে ওই জওয়ানের হাত ফস্কে ইনসাস রাইফেলটি মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। তার ফলেই গুলি বেরোয়। মাটির দিকে বন্দুকের নল থাকায় গুলি ছিটকে প্রথমে মাটিতে লাগে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। কার্তুজের খোল ও রাইফেলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেটি ‘ব্যালিস্টিক’ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
এই ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত আহতদের পরিবারের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুক্রবার প্রথমে আর জি কর ও পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয় ওই মহিলা ও তাঁর ছেলের। শনিবার সকালে ফের তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে আসেন। সঙ্গীতাদেবীর স্বামী সুগত বসু মেট্রো কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘‘এত বড় ঘটনার পরে মেট্রোর কেউ খোঁজ নিল না!’’ তিনি জানান, স্ত্রী ও ছেলে সুস্থ হলে অভিযোগ দায়ের করবেন তিনি। ছেলের পায়ের ক্ষতে কোনও ধাতব টুকরো বিঁধে রয়েছে বলেও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
গুলি-কাণ্ড নিয়ে মেট্রো ও রেলরক্ষী বাহিনীর কর্তারা যারপরনাই বিব্রত। এ দিন দেখা গেল, রাইফেলের ‘নিশানা বদল’ হয়েছে। এত দিন দমদম স্টেশনের বাঙ্কারে রাইফেল উঁচিয়ে দাঁড়াতেন জওয়ানেরা। এ দিন দেখা গেল, দুই জওয়ানের রাইফেল নীচে। আসা-যাওয়ার পথে কিছু ‘উৎসাহী’ যাত্রী বাঙ্কারের সামনে গিয়ে গুলি-কাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন করছিলেন। ওই বাঙ্কারের কাছেই গুলির দাগ ঘিরে চকের দাগ দেওয়া ছিল। যাত্রীদের পায়ে পায়ে সে দাগ অবশ্য মুছে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, প্রমাণ আগেই সংগ্রহ হয়েছে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের ব্যাখ্যা, আহতেরা অভিযোগ না করলেও মেট্রো ঘটনাটি জানিয়েছে। তাই আপাতত মামলা রুজু না হলেও সিঁথি থানা তদন্তের কাজ এগিয়ে রাখছে। ওই জওয়ানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দিন কয়েক আগে প্রশিক্ষণ শেষ করে চাকরিতে যোগ দেওয়া ওই জওয়ানের গাফিলতি ছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। মেট্রো সূত্রের খবর, রেলরক্ষী বাহিনীর বিধি মেনে অভিযুক্ত জওয়ানকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার তিন অফিসারকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাইফেলটিও তাঁরা পরীক্ষা করবেন। আরপিএফের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দু’রাউন্ড গুলি বেরোনোর পরে রাইফেল লক হয়ে যাওয়ায় আর গুলি বেরোয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy