Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চিকিৎসা ‘ফ্রি’, জানা নেই অ্যাসিড আক্রান্তের স্ত্রীর

গোলমালের জেরে মানসিক ভাবে অসুস্থ ব্যক্তির মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

সম্পত্তি নিয়ে গোলমালের জেরে মানসিক ভাবে অসুস্থ ব্যক্তির মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁরই দাদা-বৌদির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বৌদিকে গ্রেফতারের আগেই তিনি পালিয়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে অ্যাসিড আক্রান্তের দাদাকে। ৩ জুলাই বারুইপুর থানা এলাকার শিখরবালি অঞ্চলের ঘটনা। কিন্তু অ্যাসিডে আক্রান্ত যুবকের স্ত্রীর অভিযোগ, স্বামীকে সুস্থ করতে যে সরকারি সাহায্য পাওয়ার কথা, তা তাঁকে থানা থেকে জানানো হয়নি। ফলে সরকারি হাসপাতালে রেখেও চিকিৎসার জন্য প্রতি দিন বেরিয়ে যাচ্ছে হাজার খানেক টাকা!

ওই অ্যাসিড আক্রান্ত যুবকের স্ত্রী জানিয়েছেন, বিয়ের কয়েক বছর পরে তাঁর স্বামী মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে সংসার চালানোর জন্য তিনি একটি অফিসের সাফাইকর্মীর কাজের পাশাপাশি, একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে শুরু করেন। তাঁদের একটি আট বছরের সন্তান রয়েছে। গত ৩ জুলাই তিনি কাজে বেরোনোর পরে কোনও কারণে স্বামীর সঙ্গে গোলমাল হয় তাঁর দাদা-বৌদির। অভিযোগ, সেই গোলমালের জেরে তাঁর স্বামীকে প্রথমে বাঁশ দিয়ে মারধর করেন জা এবং ভাসুর এবং পরে স্বামীর মাথায় অ্যাসিডও ঢেলে দেন। তাঁর স্বামীর চিৎকার শুনতে পেয়ে পড়শিরা ছুটে এলে ভাসুর-জা পালিয়ে যান।

খবর পেয়ে ওই বধূ বাড়ি এসে স্বামীকে প্রথমে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ওই বধূর অভিযোগ, সে দিনই বারুইপুর থানায় অভিযোগ জানানো হলেও দু’দিন পরে পুলিশ ভাসুরকে গ্রেফতার করে। জা এখনও পলাতক। অ্যাসিড আক্রান্ত স্বামীকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করলেও ওষুধ কেনা থেকে শুরু করে আয়া রাখতে বেরিয়ে যাচ্ছে প্রচুর টাকা। অথচ অ্যাসিডে আক্রান্তের যাবতীয় খরচ সরকারি ভাবে বহন করার কথা। কিন্তু শহরতলির বাসিন্দা ওই বধূ তা না পাওয়ায় চিকিৎসা কত দিন টানতে পারবেন তা ভেবে দিশাহারা। এ দিকে স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি কাজও হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন ওই বধূ।

যদিও এই অজ্ঞানতার ঘটনা নতুন নয় বলেই দাবি অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির। এমনই এক সর্বভারতীয় সংস্থার কলকাতা শাখার কোঅর্ডিনেটর দিব্যলোক রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘অ্যাসিড আক্রান্তের ক্ষেত্রে শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি হাসপাতালকেও নিখরচায় চিকিৎসা করার নির্দেশ আইনে দেওয়া আছে। কিন্তু অনেকেই সেই আইন না জানায় তাঁদের চিকিৎসায় অনেক খরচ হয়ে যায়।’’ তবে পুলিশের দায়িত্ব থাকে আক্রান্তের পরিবারকে আইন সম্পর্কে বিশদে বোঝানোর। কিন্তু তা কার্যত প্রায় করা হয় না বলেই মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসাটুকুও করাতে পারেন না।

এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে বারুইপুর পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, অ্যাসিড আক্রান্তের স্ত্রীকে ডেকে পাঠিয়ে যা করণীয় তা করার ব্যবস্থা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical Health Acid Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE