প্রচুর পরিমাণে ভেজাল গুঁড়ো দুধ উদ্ধার হল বড়বাজারে। —নিজস্ব চিত্র।
খুপরি একটা ঘর। মেঝেতে বিভিন্ন মাপের প্লাস্টিক এবং চটের বস্তা রাখা। বস্তা থেকে সাদা রঙের কিছু বার করে একটি পাত্রে মেশাচ্ছে দুই ব্যক্তি। পরে তা প্লাস্টিকের কন্টেনারে ভরে সিল করে দেওয়া হচ্ছে। দ্রুততার সঙ্গে চলছে কাজ। হঠাৎই হাজির হলেন গাঁট্টাগোট্টা চেহারার কয়েক জন। ওই দুই ব্যক্তি কিছু বোঝার আগেই ঘরে ঢুকে ‘পজিশন’ নিলেন তাঁরা। মেঝেতে ডাঁই করে রাখা প্লাস্টিক এবং চটের বস্তা খুলেও দেখলেন।
ওই ব্যক্তিরা আসলে কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার (ইবি) গোয়েন্দা। নামী সংস্থার মোড়কে ভেজাল গুঁড়ো দুধ তৈরির রমরমা কারবার চলছিল খুপরি ঘরটিতে। বুধবার নেতাজি সুভাষ রোডের রাজাকাটরায় একটি গুদামে হানা দিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই দু’জনকে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার কেজি ভেজাল গুঁড়ো দুধ। ধৃত সুনীল তাঁতি এবং অরূপ ভাদুড়ী গুদামের কর্মী। তারা ধরা পড়লেও অবশ্য গা-ঢাকা দিয়েছে গুদামের মালিক দিলীপ সাহা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এর আগেও জোড়াসাঁকো এলাকা থেকে ভেজাল গুঁড়ো দুধ তৈরির একটি চক্রের সন্ধান মিলেছিল। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল তিন জন।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, ইবি-র তদন্তকারীদের কাছে কিছু দিন আগে খবর আসে, রাজাকাটরার একটি গুদামে খুব ভোরে কর্মীরা এসে গুঁড়ো দুধ তৈরি করছে। সকাল দশটার মধ্যেই সেই দুধ কন্টেনার-বন্দি হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। সেই খবরের ভিত্তিতে এ দিন ওই গুদামে হানা দেন ইবি-র গোয়েন্দারা। ধৃতদের জেরা করে উদ্ধার হয় নামী সংস্থার দুধের কার্টন, প্যাকেট এবং কন্টেনার। ধৃত সুনীল এবং অরূপ জেরায় দাবি করেছে, তিনটি বস্তা থেকে তিন রকম কম দামি গুঁড়ো দুধ-পাউডার মিশিয়ে তৈরি হত ওই ভেজাল দুধ।
ইবি সূত্রের খবর, প্রতিদিন রাজাকাটরার ওই গুদাম থেকে প্রায় এক হাজার কেজি ভেজাল গুঁড়ো দুধ শহরের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা হত। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গুদামের মালিকের খোঁজ পেলে পুরো চক্রের সন্ধান মিলবে। কোথায় কোথায় ওই ভেজাল দুধ সরবরাহ করা হয়েছিল, ধৃতদের জেরা করে আপাতত তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy