রাতারাতি: প্রবেশ নিষেধ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বন্ধ কলেজ স্কোয়ার । শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
তালাবন্ধ কলেজ স্কোয়ার।
জানা ছিল মিটিং-মিছিল আর হবে না সেখানে। কে জানত আড্ডাও বন্ধ!
শুক্রবার বিকেলে কলেজ ফেরত অনেকেই তাই হতবাক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে কলেজ স্কোয়ারে বড় তালা ঝুলছে। বন্ধ সূর্য সেন স্ট্রিটের দিকের দরজাও।
এ দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বহু পড়ুয়া কলেজ স্কোয়ারের দিকে গিয়ে বেশ হকচকিয়ে যান। অনেকেই হতাশ মুখে ব্যাগ কাঁধে বাড়ি মুখো হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরের এক ছাত্র প্রীতম রায় বলেন, ‘‘ক্লাস শেষে বন্ধুদের সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতাম কলেজ স্কোয়ারে। আড্ডা হল না, তাই বাড়ি ফিরছি।’’
তবে মিছিল-মিটিং বন্ধের সিদ্ধান্তে খুশি কলেজ পাড়ার অধিকাংশ পড়ুয়া। বছরভর মাইকের অত্যাচারের হাত থেকে যে মুক্তি মিলবে, তাতেই খুশি তাঁরা। কিন্তু তাঁদের আর্জি, অন্তত একটা দরজা খোলা থাকুক। শব্দের দৌরাত্ম্য, বিরোধী কণ্ঠস্বর চাপা দেওয়ার মতো ভারী সব প্রশ্নের তলায় যেন চাপা না পড়ে কলেজ ফেরত প্রেম, সস্তায় পুষ্টিকর চিকেন স্ট্যু আর হাজার নস্ট্যালজিয়া।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া অভিযোগ করেন, কলেজ স্কোয়ারে রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিংয়ের জেরে ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনার। তা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলেজ স্কোয়ারে মিছিল-মিটিং করা যাবে না। সে দিন বিকেলে লালবাজার জানিয়ে দেয়, সোমবার থেকে কলেজ স্কোয়ারে কোনও মিছিল-মিটিং হবে না। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি। তার আগেই পড়েছে তালা।
এ দিন একাধিক রাজনৈতিক সংগঠনের সমাবেশ ছিল কলেজ স্কোয়ারে। কেউ ঢুকতে পারেনি। এ দিন পুলিশ পাহারাও ছিল বেশি। কলেজ স্কোয়ারে ঢুকতে না পেরে রাস্তা বন্ধ করেই এ দিন সমাবেশ হয়। যানজটের জেরে ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে।
এ সব দেখে শহরের একাংশ বলছে, হারিয়েছে তো অনেক কিছুই। পাড়ার রকের বৈঠক ছেড়ে এখন বাঙালি অভ্যস্ত ভার্চুয়াল বন্ধুত্বে। হারিয়ে যাওয়ার সেই তালিকাতেই হয়তো নব সংযোজন কলেজ স্কোয়ারে রাজনীতি-চর্চা। বিরোধী দল অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘বিরোধী কণ্ঠস্বর বন্ধ করতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত।’’
কিন্তু এ দিনই কেন তালা পড়ল? ৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান অপরাজিতা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘তালা দেওয়ার ব্যাপারে জানি না। আমি অসুস্থ।’’ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপ্না দাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনে পাওয়া যায়নি তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy