Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুণ্যার্থী কম, তাই দ্রুত সাফ বিকল্প জলাশয়

জলাশয়গুলির কোনওটিতে মাত্র ১৫টি, আবার কোথাও ৫০টি পরিবার পুজো সেরেছে। যেমন, গল্ফগ্রিনের গোবিন্দন কুট্টি এবং রামধন পার্কের জলাশয় দু’টিতে হাতেগোনা পুণ্যার্থী পুজো সেরেছেন। একই চিত্র ছিল মাদারতলা জলাশয়েও।

সাফসুতরো: পুণ্যার্থী কম, তাই পুজোর পরেও তুলনায় পরিষ্কার মাদারতলা জলাশয়। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সাফসুতরো: পুণ্যার্থী কম, তাই পুজোর পরেও তুলনায় পরিষ্কার মাদারতলা জলাশয়। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share: Save:

কোনও জলাশয়ের তিনটি ঘাট মিলিয়ে একশো পুণ্যার্থী। তো কোথাও আবার দু’-আড়াইশো। বাকিরা ছুটেছেন সেই জাতীয় সরোবরেই। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সেখানে প্রায় কুড়ি হাজার জনতার সমাগম হয়েছে। বেড়েছে দূষণ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, যে কারণে দক্ষিণ কলকাতায় ১১টি বিকল্প জলাশয়কে তড়িঘড়ি ছটের জন্য প্রস্তুত করা হল, তার সুফল কোথায় মিলল?

চলতি বছরে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল, রবীন্দ্র সরোবরে ছট পালন করা যাবে না। যাতে পুণ্যার্থীদের অসুবিধা না হয়, মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ-প্রশাসন এবং কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কয়েকটি জলাশয়ে ঘাট তৈরি করার। সেই মতো গঙ্গার বিভিন্ন ঘাট ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার ১১টি জলাশয়ে কাঠ এবং পাটাতন দিয়ে ঘাট তৈরি করে দিয়েছিল পুরসভা। পাশাপাশি বাঁশ দিয়ে জল ঘিরে দিয়েছিল প্রশাসন। তৈরি হয়েছিল পুলিশের অস্থায়ী শিবির এবং মেডিক্যাল টিম। প্রস্তুত ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ডুবুরিও।

কিন্তু সবই সাজানো অবস্থাতে প্রায় পড়ে রইল। কারণ, জলাশয়গুলির কোনওটিতে মাত্র ১৫টি, আবার কোথাও ৫০টি পরিবার পুজো সেরেছে। যেমন, গল্ফগ্রিনের গোবিন্দন কুট্টি এবং রামধন পার্কের জলাশয় দু’টিতে হাতেগোনা পুণ্যার্থী পুজো সেরেছেন। একই চিত্র ছিল মাদারতলা জলাশয়েও। পুজো করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই জল থেকে ফুল-পাতা তুলে ফেলার জন্য সতর্ক ছিলেন পুরসভার সাফাইকর্মীরাও। ফলে সে ভাবে কোনও জায়গাতেই জলদূষণ চোখে পড়েনি।

একই ছবি ধরা পড়েছে ই এম বাইপাস লাগোয়া রুবি হাসপাতালের বিপরীতে এবং নোনাডাঙার জলাশয়ের ঘাটগুলিতে। দু’টি জলাশয়ে মোট ছ’টি ঘাট তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ১৫০-২০০ পরিবার পুজো করে গিয়েছেন। পাটুলি ঝিলে পুণ্যার্থীদের সংখ্যা ছিল আড়াইশো। আবার বরো দশের অধীনে থাকা রানিকুঠি ঝিল, দশ নম্বর পুকুর, গোবিন্দন কুট্টি, রামধন পার্ক এবং যোধপুর পার্ক জলাশয়ে মোট সাড়ে পাঁচশোর মতো পরিবার পুজো সারে। জনসমাগম কম হওয়ায় এবং পুর কর্মীরাও সতর্ক থাকায় রবিবার বেলার মধ্যেই ওই সব জলাশয় এবং ঘাট পরিষ্কার ছিল। তবে জলদূষণ না হলেও মাইক কিংবা ডিজে বক্সের ব্যবহার সেখানে ছিল চোখে পড়ার মতোই।

অথচ যে রবীন্দ্র সরোবর ছটের জন্য ব্যবহারই নিষিদ্ধ করেছিল আদালত, সেখানেই হাজার হাজার জনসমাগমে দূষিত হয়েছে এলাকা। প্রশ্ন উঠেছে, তবে এই জলাশয়গুলি করার যৌক্তিকতা কোথায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE