—ফাইল চিত্র।
তিন দিন পর বাগড়ি মার্কেটের আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এখনও ভাঙা জানলা-দরজা দিয়ে গলগল করে বেরচ্ছে কালো ধোঁয়া। দেওয়াল তেতে রয়েছে। কোথাও কোথাও ফাটলও দেখা দিয়েছে। কিছু দিন আগেও যে চত্বরে পা ফেলার জায়গা ছিল না, এখন খা খা করছে সেই চত্বর।
রবিবার থেকে বুধবার হয়ে গেল। ছ’তলা ওই বাড়ির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের এখন একটাই চিন্তা, ফের কবে মার্কেট চালু হবে?
সারা দিন ধরে আগুনের সঙ্গে মোকাবিলার পর, বিকেলে কিছু ক্ষণের জন্য বিরতি নিয়েছিলেন দমকলকর্মীরা। সবেমাত্র চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়েছেন। এমন সময় হইহই কাণ্ড। ওই মার্কেটের কয়েক জন ব্যবসায়ী ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে দাবি করেন, বাগড়ি মার্কেটের দোতলার ‘এ’ ব্লকের শৌচালয়ের ভিতরে পেট্রলের একটি খালি ব্যারেল রাখা রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই এই খবর চাউর হয়ে যায়। পুলিশ, দমকলকর্মীদের ঘিরে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামাতে হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও চলে আসে।
তবে এই খালি ব্যারেলকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, এখানে কে পেট্রলের ব্যারেল রাখল? এর পিছনে ষড়যন্ত্র নেই তো?
যদিও গত তিন দিন ধরে আগুন নেভাতে গিয়ে পুলিশ, দমকল, এমনকি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদের চোখে পড়েনি এই ব্যারেল। এ দিন কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের দোকান দেখতে গিয়েই আচমকা এই ব্যারেলের সন্ধান পান। তাঁরাই বড়বাজার থানার পুলিশকে ডেকে ওই ব্যারেলটি তুলে দেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যদিও প্রশ্ন উঠছে, চার দিন ধরে এই ভয়াবহ আগুন জ্বলার পরেও ওই ধাতব ব্যারলটির কোনও বিকৃতি ঘটল না কেন? পাশে পড়ে থাকা একটি প্লাস্টিকের বোতলই বা কী করে অক্ষত অবস্থায় রইল? এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশ ও দমকলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: মেঝেতে হাঁটুজল ফুটছে টগবগ করে, জলের ভারে মেঝে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাগড়িতে
আগুন লাগার পর থেকেই সেখানকার ব্যবসায়ীরা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছিলেন। এ দিনের ঘটনার পর ফের তাঁরা সরব হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই রাধা বাগড়ি, তাঁর ছেলে বরুণরাজ বাগড়ি এবং বাগড়ি এস্টেটের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে দমকল। তাঁদের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্র, ধ্বংসের জন্য দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল আইনের একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার বড়বাজার থানার পুলিশ আদালতে গিয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করে। আদালত তা মঞ্জুরও করেছে।
আরও পড়ুন: ৬২ ঘণ্টা পার করে অবশেষে এফআইআর, মালিকেরা বেপাত্তা, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী মহল
এখনও পর্যন্ত বাগড়ি-কাণ্ডের তদন্ত থানার হাতেই রয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে তদন্তভার নিতে পারে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy