গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
অ্যাপ-ক্যাব ভাড়া করে বস্তার মধ্যে পুরে দু’টি দেহ গাড়ির ডিকিতে রাখা হয়েছিল। তার পরে সেই বস্তা ফেলা হয়েছিল নোনাডাঙার খালে। ওই গাড়িতে হোটেলের চার জন কর্মী ছিলেন। ধর্মতলার একটি হোটেল থেকে উল্টোডাঙার বাসিন্দা অর্চনা পালংদার ও তাঁর প্রণয়ী বলরাম কেশরীর দেহ লোপাটের অভিযোগে ধৃত আশিস যাদবকে জেরা করে পুলিশ এমনটাই জেনেছে। ওই অ্যাপ-ক্যাবের খোঁজে ধর্মতলার এস এন ব্যানার্জি রোডের ওই হোটেলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করছে পুলিশ। রবিবার হোটেলের মালিক অর্জুন কপূর ও অন্য কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন আনন্দপুর থানা ও লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
আশিসকে জেরা করে শুক্রবার নোনাডাঙা খাল থেকে বলরামের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বিষক্রিয়ায় বলরামের মৃত্যু হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, অর্চনাকে গলা টিপে হত্যা করে বলরাম বিষ খান।
হোটেলের ম্যানেজার-সহ অন্য কর্মীদের কর্মকাণ্ড দেখে অবাক তদন্তকারীরা। ওই হোটেলের পাশেই নিউ মার্কেট থানা। অথচ পুলিশকে কিছু না জানিয়ে চার জন মিলে দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়। ১৭-১৯ সেপ্টেম্বরের সব ফুটেজ হোটেলের সিসি ক্যামেরা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি, হোটেলের খাতাতেও বলরাম-অর্চনার নাম পাওয়া যায়নি। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘যে কায়দায় হোটেলের লোকজন দু’টি দেহ লোপাট করেছে তা বড় অপরাধ। এই অপরাধে সাত বছরের জেল হতে পারে। পাশাপাশি, গুরুত্ব বুঝে খুনের ধারাও যুক্ত করা যেতে পারে।’’ হোটেলের ম্যানেজার-সহ ছ’জন কর্মী এখনও ফেরার। তাদের খোঁজে ঝাড়খণ্ডে রওনা দিয়েছে একটি বিশেষ দল।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন বছর পঁয়ত্রিশের অর্চনা। ২০ সেপ্টেম্বর চৌবাগা লকগেট থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করেন তাঁর স্বামী পিন্টু পালংদার। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের সন্দেহ হয়, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই অর্চনা খুন হয়েছেন। অর্চনার প্রেমিক বলরামের খোঁজে সপ্তাহ দু’য়েক আগে ঝাড়খণ্ডে যায় পুলিশ। সেখানে বলরামের স্ত্রী জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ বলরামও। এর পরে বলরাম ও অর্চনার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ জানতে পারে, ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর তাঁরা ধর্মতলায় ছিলেন। ওই এলাকার বিভিন্ন হোটেল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শুক্রবার ঝাড়খণ্ড থেকে এক হোটেলের অস্থায়ী কর্মী আশিস যাদবকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy