কলকাতা স্টেশনে মাদক সহ ধৃত চিনা নাগরিকরা।— নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’শো কিলোগ্রাম মাদক ট্যাবলেট নিয়ে কলকাতায় ধরা পড়লেন পাঁচ চিনা নাগরিক। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ এই মাদক ট্যাবলেটের মধ্যে মেটামেম্ফাটাইন, অ্যামফেটামাইনের মতো ড্রাগ রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা তদন্তকারীদের। এ ছাড়া ধৃতদের কাছে পাঁচটি আইফোন, ৬০টিরও বেশি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ও চিনা সিমকার্ড পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে দু’টি ভারতীয় সিমকার্ডও।
চিনা নাগরিকদের কাছ থেকে এই বিপুল পরিমান মাদক আটক হওয়ার পর গোয়েন্দাদের সন্দেহ, দেশের বাজারে ছেয়ে যাওয়া এই পার্টি ড্রাগ আদতে চিন থেকেই আমদানি করা হয়। এই আন্তর্জাতিক মাদক কারবারের জাল দেশের বিভিন্ন বড় শহরে ছড়িয়ে আছে বলেও অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। চিন থেকে কলকাতা— এই মাদক যোগের প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। মাদকে এই চিন যোগ কিন্তু কপালে ভাঁজ ফেলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।
কী ভাবে ধরা পড়ল ওই পাঁচ চিনা নাগরিক?
আরও পড়ুন, ভূগোলে ৬৫০০০, ইংরেজি ১৬০০০, হাজার হাজার টাকা দিলেই মিলবে সিট!
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ কলকাতা স্টেশন চত্বরেই রুটিন টহলদারি করছিলেন রেলপুলিশের জওয়ানরা। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাসের পেছনে আড়াল রেখে ওই পাঁচ জনকে বসা অবস্থায় সন্দেহজনক ভাবে একটি ব্যাগ থেকে অন্য ব্যাগে কিছু ভরতে দেখা যায়। রেল পুলিশকর্মীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ওই ব্যক্তিদের উঠে দাঁড়াতে বলেন। তার পর তল্লাশি শুরু হতেই তাদের হাত ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় কিছু ট্যাবলেট। যা দেখে মাদক ট্যাবলেট বলে সন্দেহ হয় পুলিশের।
উদ্ধার হওয়া পার্টি ড্রাগ।— নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ জনকেই আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় দমদম জিআরপি থানায়। সেখানে আরও ভাল করে তল্লাশি চালাতে গিয়ে উদ্ধার হয় ১৯৮ কিলোগ্রাম মাদক ট্যাবলেট। তল্লাশির সময়ে আটক পাঁচ জনের কাছ থেকে পাওয়া যায় পাসপোর্ট। যেখান থেকে জানা যায় ওরা প্রত্যেকেই চিনা নাগরিক। চিনের গুয়াংঝৌ প্রদেশের বাসিন্দা।
ধৃতদের কাছ থেকে শুক্রবার গভীর রাতের (রাত ১টা ২০ মিনিট) ক্যাথে প্যাসিফিক বিমান সংস্থার টিকিটও পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ ধরা পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হংকং-এর বিমান ধরার কথা ছিল। সেথান থেকে গুয়াংঝৌ।
কিন্তু কোথা থেকে ওরা এই বিপুল পরিমাণ মাদক ট্যাবলেট নিয়ে আসছিল?
আরও পড়ুন, স্ত্রী মশগুল চ্যাটে, বিচ্ছেদ চান স্বামী
সে সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই তদন্তকারীদের কাছে। কারণ, ধৃতদের মধ্যে এক জন ছাড়া বাকিরা চিনা ভাষা ছাড়া আর কোনও ভাষা জানে না। এক জন শুধু ভাঙা ভাঙা ইংরেজি জানে। পাসপোর্ট অনুযায়ী তার নাম ওয়াং জিয়াংঝৌ, বয়স ৩৬ বছর।
ধৃতদের একজনের পাসপোর্ট।— নিজস্ব চিত্র।
ধৃতদের পাসপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে ওরা বছরে অন্তত চার বার করে ভারতে এসেছে। কখনও কলকাতা, কোনও সময়ে দিল্লি বা মুম্বই গিয়েছে তারা। ধৃতদের দাবি, পাঁচটি ট্রলি ব্যাগে ভর্তি ওই মাদক তারা চিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গোয়েন্দাদের অনুমান, এই তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে ধৃতেরা। তাঁদের সন্দেহ, কলকাতা স্টেশনেই কাউকে এই মাদক পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল ধৃতদের। কিন্তু, তার আগেই তারা রেলপুলিশের হাতে পাকড়াও হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy