রাস্তা তৈরি করবেন যে ঠিকাদার, তাঁকেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাস্তার দায়ও নিতে হবে। রাজ্য পূর্ত দফতর আগেই এমন নিয়ম চালু করেছে। এ বার সেই পথে হাঁটছে কলকাতা পুরসভাও। মঙ্গলবার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেই এ কথা জানান। দিন কয়েক আগে শহরের রাস্তা নিয়ে নবান্নে পুর কমিশনারকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভর্ৎসনায়’ শোরগোল পড়ে পুরমহলে। নবান্নে ওই বৈঠকের পরেই রাস্তা সারাইয়ে নেমে পড়ে পুর প্রশাসন। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ নিজেও কাজের তদারকি করেন। এমনকি, রবিবারও বৈঠক হয় পুরভবনে। তবে তা নিয়ে বক্তব্য মেলেনি মেয়রের। মঙ্গলবারই রাস্তা নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শহরের রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে, চলবেও।’’
দিন কয়েক আগেই পুর অধিবেশনে বিরোধী কাউন্সিলরেরা শহরের একাধিক রাস্তার হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁদের তোলা প্রশ্নের জবাবে মেয়র সে দিন বলেছিলেন, ‘‘কলকাতার রাস্তা দেশের যে কোনও শহরের চেয়ে ভাল।’’ কিন্তু তার এক দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার রাস্তার খানাখন্দ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন মেয়রের উপস্থিতিতেই। পুর কমিশনারকে ‘ধমকও’ দেন। তার পরেও চুপই ছিলেন মেয়র। এ দিন তাঁকে সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘‘শহরের রাস্তায় খানাখন্দ যা ছিল, তা দ্রুত সারানো হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই পুরসভা সূত্রে জানা যায়, পুরসভার ১৮০০ কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রতি বছরই ২৫০ কোটি টাকা করে খরচ হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ফি বছর একই রাস্তার এক কিলোমিটারের জন্য ১৪ লক্ষ টাকা করে খরচ হচ্ছে।
বছর বছর একই রাস্তার জন্য টাকা খরচ হচ্ছে অথচ তা ভাল থাকছে না কেন? এ বিষয়টি তুলতেই শোভনবাবু ঠিকাদারদের দায়িত্বের কথা তুলে বলেন, ‘‘এ বার থেকে যে ঠিকাদার যে রাস্তা তৈরি করবেন, তাকেই আগামী বেশ কিছু সময় তা ঠিক রাখার দায়িত্বও নিতে হবে।’’ তা দু’বছর, না তিন বছর পরে ঠিক হবে। তবে ওই সময় পর্যন্ত রাস্তার হাল খারাপ হলে সারিয়ে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকেই।’’ তিনি জানান, খুব শীঘ্রই এই নিয়ম চালু করতে চায় পুর প্রশাসন। পাশাপাশি রাস্তা খারাপ হওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার মাটিও কিছুটা রাস্তা খারাপের কারণ। বৃষ্টিতে দ্রুত খারাপ হয়ে যায়।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাইপাসের রাস্তা নিয়েও। মেয়রের বক্তব্য, ‘‘রুবি মোড়ের কিছু অংশে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলছে। ওইটুকু অংশ ছাড়া বাকি রাস্তা খারাপ বলে আমি মনে করি না।’’
এ দিনই পুরভবনে ঠিকাদারদের নিয়ে বৈঠক করে পুর প্রশাসন। ওই বৈঠকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, রাস্তা নির্মাণের কাজে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। কোনও অসুবিধা হলে তা পুর প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। যদিও ওই বৈঠকে যাঁরা হাজির হয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদার কি না, তা নিয়ে পুরমহলেও সংশয় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy