Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

বিধাননগরে সংক্রমণের উৎস এখনও অজানাই

কেন এ ভাবে প্রকোপ বাড়ছে করোনার?

ছবি: আইস্টক।

ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০২:৫৭
Share: Save:

গড়ে দিনে আক্রান্ত হচ্ছেন ৩০-৪০ জন। কখনও কখনও সেই সংখ্যা চল্লিশও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। জুন মাসের শেষ থেকে ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে আক্রান্তের রেখচিত্র। ছবিটা বিধাননগর পুর এলাকার। পুরসভা সূত্রের খবর, ৮ জুলাই পর্যন্ত উপনগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশো। তাঁদের মধ্যে কম-বেশি ৩০০ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। পুরসভা জানাচ্ছে, জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ ব্যাপক আকার নিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৪২-৪৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে।

কেন এ ভাবে প্রকোপ বাড়ছে করোনার? পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এর পিছনে বেশ কিছু কারণ উঠে এলেও নির্দিষ্ট ভাবে সংক্রমণের উৎস এখনও পাওয়া যায়নি। সল্টলেকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা জানাচ্ছেন, মূলত দু’টি বিষয় সামনে এসেছে। প্রথমত, ব্যবসায়ী, দোকানের কর্মচারী থেকে শুরু করে বহু লোক প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছেন। অফিসে বা যাতায়াতের পথে সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, অনেক বাড়িতে গাড়িচালক থেকে শুরু করে পরিচারক-পরিচারিকা, মালি, নিরাপত্তারক্ষীরা বাইরে থেকে যাতায়াত করছেন। তাঁদের থেকেও সংক্রমণের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তবে পুরসভা জানাচ্ছে, এমনও দেখা গিয়েছে, কোনও প্রবীণ নাগরিক সারা দিন বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু সেই বাড়ির অন্য সদস্য কিংবা বাইরে থেকে বাড়িতে আসা লোকজনের করোনা পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। ফলে কী ভাবে ওই বয়স্ক ব্যক্তি সংক্রমিত হলেন, বোঝা যাচ্ছে না। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিতা মণ্ডল জানান, তাঁর ওয়ার্ডে একটি ব্লক এবং একটি আবাসনে একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন। অনুমান, কর্মস্থল থেকে সংক্রমিত হয়েছেন তাঁরা। আবার বাড়িতে থেকেও আক্রান্ত হয়েছেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। ৩৪ নম্বর

ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানা জানান, তাঁর ওয়ার্ডে আক্রান্তদের মধ্যে ব্যবসায়ী, ব্যাঙ্ককর্মীর পাশাপাশি রয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের এক নাগরিক। কিন্তু কোথা থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, নির্দিষ্ট ভাবে তা বলা যাচ্ছে না।

আরও একটি বিষয় ভাবাচ্ছে পুরকর্তাদের। তাঁরা বলছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্তও একটি পরিবারে এক জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পরিবারের একাধিক সদস্যের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। পুরকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, সংক্রমণের রক্তচক্ষু সত্ত্বেও মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার মতো বিষয়ে নাগরিকদের একটা অংশের শৈথিল্য রয়েই গিয়েছে।

মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একজোট হয়ে সংক্রমণের উৎস খোঁজার চেষ্টা চলছে। দূরত্ব-বিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরার উপরে আমরা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’’ মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘সংস্পর্শ থেকেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। তবে কাদের সংস্পর্শে আক্রান্তেরা এসেছিলেন, সেটা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ন্যূনতম সুরক্ষা-বিধি যাতে মানুষ মেনে চলেন, সে জন্য তাঁদের কাছে বার বার আবেদন জানানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Bidhannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE