Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

পাইকারি বাজারে দোকান বন্ধ, ওষুধ সরবরাহে বিঘ্ন

উৎপাদন না থাকায় কয়েকটি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ কমে গিয়েছে বলে ওই সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৩:০৯
Share: Save:

কলকাতার পাইকারি ওষুধ বাজার বাগড়ি মার্কেট, মেহতা বিল্ডিং এবং গাঁধী বিল্ডিংয়ে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি সেখানে মালিক ও কর্মচারী মিলিয়ে সাত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু দোকান। বাকি দোকান খোলা হচ্ছে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন। বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দ্রেশ সিংভি বলেন, ‘‘সাত জন আক্রান্তের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই কিছু দোকান বন্ধ রয়েছে।’’

উৎপাদন না থাকায় কয়েকটি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ কমে গিয়েছে বলে ওই সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে পাইকারি বাজারে কম দোকান খোলা থাকায় বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত ওষুধ হাতে পাচ্ছেন না। তবে সম্প্রতি সরকারি তরফে বেশ কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করায় ওষুধের উৎপাদন স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই মুহূর্তে ওষুধ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়পার মিলছে না। এ ছাড়াও ইনসুলিন, ইনহেলার, অ্যাসপিরিন ও ভিটামিন সি ট্যাবলেটের জোগান কম রয়েছে। ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ডায়পার মূলত মহারাষ্ট্র, আমদাবাদ ও দিল্লি থেকে সরবরাহ করা হয়। বহু পরিবহণ বন্ধ থাকায় কলকাতায় পৌঁছচ্ছে না ডায়াপার। নানা অসুখে যাঁরা শয্যাশায়ী, তাঁদের জন্য ডায়াপার খুবই জরুরি। ডায়াপার না পেলে তাঁদের শরীরে ‘বেডসোর’ হয়ে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া, বাড়িতে থাকা ক্যানসার ও ডায়ালিসিস রোগীদেরও ডায়াপার প্রয়োজন হয়। অল ইন্ডিয়া কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস ফেডারেশনের সম্পাদক জয়দীপ সরকার বলেন, ‘‘ডায়পারের ভিতরে জলীয় পদার্থ শোষক যে জেলটি থাকে, সেটি ভিন্‌ রাজ্যের কারখানায় তৈরি করা হয়। লকডাউনে কারখানা বন্ধ থাকায় ডায়পার তৈরিও বন্ধ।’’

ভিন্‌ রাজ্য থেকে এ রাজ্যে আসে ইনসুলিন, অ্যাসপিরিন, ইনহেলারও। অ্যাসপিরিন মূলত রক্ত পাতলা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। হৃদ্‌রোগীরা প্রায়ই এই ওষুধ ব্যবহার করেন। হাঁপানি এবং সিওপিডি জাতীয় ফুসফুসের নানা রোগে ব্যবহৃত ইনহেলারের সরবরাহও দিন দশেক ধরে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার ওষুধ বাজার সংগঠনের নেতারা। করোনা সংক্রমণের সময়ে ফুসফুসের রোগের ওষুধের অপ্রতুলতা ভাঁজ ফেলেছে চিকিৎসকদের কপালেও।

এই পরিস্থিতিতে ওষুধ বাজার নিয়মিত স্যানিটাইজ় করার আবেদন করছেন ব্যবসায়ীরা। চন্দ্রেশ সিংভি বলেন ‘‘মূলত মেহতা বিল্ডিংয়ের কয়েকটি ব্লকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পুরসভার তরফে এক বার বাজার স্যানিটাইজ় করা হয়েছিল। এই কাজ নিয়মিত করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা বাজারে আসছেন। সংক্রমণের আশঙ্কায় ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা দোকান খুলতে চাইছেন না। এমন চললে ওষুধের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। বিষয়টি ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডকেও জানানো হয়েছে।’’ রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের এক কর্তা বলেন, ওই বাজারের পরিস্থিতি স্বাস্থ্য ভবন ও পুরসভাকে জানানো হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারের একাংশ জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে ধীরে ধীরে পুরো বাজারে ওই কাজ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE