বিশৃঙ্খলা: গড়িয়াগামী বাসে ওঠার জন্য ভিড় করেছেন যাত্রীরা। বুধবার, হাওড়া স্টেশন চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা ছিল, দূরত্ব-বিধি শিকেয় উঠবে। বাস পরিষেবা শুরুর প্রথম দিনে সেটাই সত্যি হল। লকডাউনের মধ্যেই বুধবার থেকে শহরে শুরু হয়েছে বাস পরিষেবা। দিনের শুরু থেকে অভিযোগ আসছিল, বাসের নির্দিষ্ট করে দেওয়া যাত্রী সংখ্যা মানতে চাইছেন না যাত্রীরাই। এ দিন সকালে বালিগঞ্জ-ডানলপের সরকারি রুটে দেখাও যায়, একটি বাসকে ২০ জনের অনেক বেশি যাত্রী নিয়ে যেতে। সিঁথির মোড়ের পরে কলকাতা পুলিশের তরফে সেই বাসের যাত্রীদের নেমে যেতে বলা হলেও তাঁরা নামেননি বলে দাবি পুলিশের। যাত্রীদের দাবি ছিল, এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বাস পেয়েছেন, অতএব নামতে পারবেন না। পর পর নিয়ম ভাঙার অভিযোগ আসতে থাকায় লালবাজার এ দিন সরকারি বাসের পিছনে মোটরবাইকে টহলদার পুলিশ দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী ঠেকানোর দায়িত্ব দেয় সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে।
পুলিশ জানায়, গড়িয়া ডিপোয় হাওড়াগামী বাস ধরতে প্রচুর যাত্রী ভিড় করেন। হাওড়া স্টেশনগামী সব বাসে যাত্রীর চাপ ছিল যথেষ্ট। পরের দিকে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী একটি বাসে উঠতে না দেওয়ায় অনেককেই ফিরে যেতে দেখা গিয়েছে। সকালের দিকে গড়িয়া, যাদবপুরের মতো বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন ছিল। তুলনামূলক ভাবে বাস ছিল কম। পরে ওই সব এলাকায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করে অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে লালবাজার।
সকালের দিকে পরিস্থিতি বেগতিক হতে দেখে বাসচালকদের পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের তরফে লালবাজারের সাহায্য চাওয়া হয়। বলা হয়, একটি বাসে কুড়ি জন ওঠার নিয়ম অনেক জায়গাতেই যাত্রীরা মানতে চাইছেন না। এর পরেই লালবাজার থেকে থানাগুলিকে বিধি মেনে বাস চলাচল করাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তা কার্যকর করতে থানাগুলি প্রতিটি সরকারি বাসের সঙ্গে মোটরবাইকে টহলদার বাহিনীকে যুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যারা নিজেদের এলাকা থেকে ওই যাত্রিবাহী বাসকে পাহারা দিয়ে পার করিয়ে দেবে। মূলত যত্রতত্র বলপূর্বক বাস দাঁড় করিয়ে যাতে অতিরিক্ত যাত্রী না ওঠেন বা কেউ যাতে গোলমাল না করেন, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: বন্দিদশা শেষে ঘরে ফেরার আনন্দে চোখে জল যাত্রীদের
জরুরি প্রয়োজন এবং নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধায় শহরে সরকারি বাস চালু করেছে পরিবহণ নিগম। সেই মতো বুধবার সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ১৩টি রুটের বাস রাস্তায় নামে। এক ঘণ্টা অন্তর রাত পর্যন্ত পরিষেবা পাওয়ার কথা। তবে বাসে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী কোনও ভাবেই তোলা যাবে না বলে চালক এবং কন্ডাক্টরদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সুরক্ষার কথা ভেবেই নিগমের তরফে যাবতীয় সুরক্ষা কবচও দেওয়া হয়েছে। বাসে যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে। তাঁদের দূরত্ব-বিধি মেনে বসতে বলা হচ্ছে।
এ দিনের বাসে ভিড়ের খবর পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। যা শুনে তাঁর আবেদন, ‘‘মানুষকে বলব, ধৈর্য হারাবেন না। সহযোগিতা করুন। আমাদের সকলকেই ভাল থাকতে হবে। একসঙ্গে কুড়ি জনের বেশি বাসে যাত্রী হলে তা আমাদের পক্ষেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। চালক, কন্ডাক্টরদের কথা এখন শোনা দরকার।’’
আরও পড়ুন: এ বার পথে নামতে পারে বেসরকারি বাস–মিনিবাস, বাড়তে পারে ভাড়াও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy