অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
১০ দিনের মধ্যে ফের গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন অন্য এক দম্পতি।
এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ২৪ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী যোধপুর পার্কের বাসিন্দা ওই মহিলার আবেদনে সাড়া দিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট দেখে অনুমতিও দিয়েছিলেন।
তার পরেই মঙ্গলবার একই রকম আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হলেন বেলেঘাটার এক দম্পতি। সেই আবেদনকারীর বয়স ৩৯ বছর। তাঁর স্বামীর বয়স ৫০। তাঁদের ১৫ বছরের একটি মেয়েও আছে। সম্প্রতি আবেদনকারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
এ দিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর কাছে আবেদনকারীর আইনজীবী অপলক বসু এবং কল্লোল বসু জানান, আবেদনকারী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই চিকিৎসকের কাছে যান। সেই সময় ধরা পড়ে গর্ভস্থ সন্তানের একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। এর পর দম্পতি একাধিক চিকিৎসকদের কাছে যান। সেখানেও চিকিৎসকরা আবেদনকারীর শারীরিক পরীক্ষা করে জানান গর্ভস্থ সন্তানের হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। ভ্রুণের স্নায়ুতন্ত্রের গঠনও অসম্পূর্ণ। ওই শিশু জন্মালে সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকবে না। দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। সমস্ত শারীরিক পরীক্ষা করতে করতেই পেরিয়ে যায় ২৫ সপ্তাহ।
এ দেশে পরিস্থিতি বিচার করে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার আইন রয়েছে আগে থেকেই। ১৯৭১ সালের গর্ভপাত আইন অনুযায়ী, গর্ভধারণের ২১ সপ্তাহের মধ্যে জটিলতা দেখা দিলে কোনও অন্তঃসত্ত্বা গর্ভপাত করাতে পারেন। কিন্তু ওই সময়সীমার পরে গর্ভপাত করাতে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ২৬ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ নয়, এই কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতার ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: ১১ বছর বয়স পর্যন্ত দেবত্ব, রহস্যে ঘেরা নেপালের এই কুমারী দেবীর জীবন
এই মহিলা ২৫ সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ায় কোনও চিকিৎসকই রাজি হননি গর্ভপাত করাতে। আবেদনকারীর আইনজীবী অপলক বসু বলেন, “আবেদনকারী গৃহবধূ। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি সংস্থায় ছোটখাটো চাকরি করেন। ওই অবস্থায় ওই সন্তানের জন্ম দিলেও তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং যত্ন নেওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি তাঁদের নেই। সেই কারণেই তাঁরা গর্ভপাতের অনুমতি চান।”
আরও পড়ুন: ইভিএম কারচুপির কৌশল ‘ফাঁস’ হতেই গোপীনাথ মুন্ডের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করলেন ভাইপো
তিনি আরও বলেন, ‘‘দম্পতি তিনটি নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজেও গিয়েছিলেন। কোনও চিকিৎসকই রাজি হননি। শেষে রবিবার তাঁরা এসএসকেএমে যান।’’ সেই রিপোর্ট এ দিন আদালতে জমা দেন আবেদনকারীর আইনজীবীরা।
বিচারপতি মামলার গুরুত্ব বুঝে এ দিনই এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল বোর্ড আবেদনকারীর শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। সেই রিপোর্ট শুক্রবারই দেখবেন বিচারপতি।
(দিনের বাছাই খবর থেকে ব্রেকিং নিউজ -কলকাতার সব খবরপড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy