Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্রেন ঘিরে আতঙ্ক, সরানো হল বাসিন্দাদের

ওড়িশার ওই দৃশ্য দেখে টালা ট্যাঙ্কের নীচে পুরকর্মীদের আবাসনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দাবি ওঠে ওই ক্রেন সরানোর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরকর্মীদেরই ওই আবাসন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় কলকাতা পুরসভা।

প্রস্তুতি: ত্রাণের জন্য পুর ভবনে ত্রিপল মজুত করছেন কর্মীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তুতি: ত্রাণের জন্য পুর ভবনে ত্রিপল মজুত করছেন কর্মীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০১:২৯
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে সকালে ওড়িশায় ছিটকে গিয়ে পড়েছিল ক্রেন। নিমেষের মধ্যে সেই দৃশ্য ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরেই আতঙ্ক শুরু হয়ে যায় উত্তর কলকাতায় টালা ট্যাঙ্ক এলাকায়। কারণ টালা ট্যাঙ্কের উপরেই রয়েছে একটি বিরাট ক্রেন। যেটি টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ওড়িশার ওই দৃশ্য দেখে টালা ট্যাঙ্কের নীচে পুরকর্মীদের আবাসনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দাবি ওঠে ওই ক্রেন সরানোর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরকর্মীদেরই ওই আবাসন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় কলকাতা পুরসভা।

পুর কর্তৃপক্ষ জানান, দশ মাস আগে ওই ক্রেনটি টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারের জন্য আনা হয়েছিল। সেটি আনতেই ৩ কোটি টাকা মতো খরচ হয়েছিল। ক্রেনটি বসাতেও অনেক দিন সময় লেগেছিল। ফলে এক দিকে ঝড়ে ক্রেন ভেঙে বিপদের আশঙ্কা, অন্য দিকে ক্রেনটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ট্যাঙ্কের সংস্কারের কাজে সমস্যা তৈরি হতে পারে— এমনটা আঁচ করে শেষ পর্যন্ত পুর আবাসনের বাসিন্দাদেরই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘ক্রেনটি ভেঙে গেলে পুর আবাসনের উপরেই পড়ত। এত দ্রুত সেটি সরানো সম্ভবও ছিল না। ফলে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা জানান, ক্রেনটি সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির

ইঞ্জিনিয়াদের ডাকা হয়েছিল। তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ক্রেনটি সরানো যায়নি। ফলে ওই ইঞ্জিনিয়ারেরা ক্রেনটির উপরে নজর রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুর আবাসনের বাসিন্দাদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

ফণীর মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। ফলে শুক্রবার সকাল ৮টার পরে পুরীতে ফণীর তাণ্ডব শুরু হতেই পথে নেমে পড়েন পুরসভার কর্মীরাও। কলকাতায় তখন ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের বাইরে বেরিয়ে আসতে পুলিশ এবং পুর প্রশাসন মাইকে ঘোষণা করতে শুরু করেন। তবে অধিকাংশই সেই আবেদনে সাড়া দেননি। মাত্র কয়েক জন পুরসভার স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দুপুরে তিলজলা থানা এলাকার সি এন রায় রোডে একটি দোতলা বাড়ির কার্নিস ভেঙে পড়ে বলে পুলিশ জানায়। তাতে কেউ হতাহত না হলেও এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

এরই মধ্যে বিকেল ৪টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে কলকাতা পুর প্রশাসনের ফণীর মোকাবিলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চান বলে খবর।

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, কলকাতার সবক’টি পার্ক তালাবন্ধ করা হয়েছে।

সন্ধ্যা বাড়তেই পুরসভার ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ জানান, রাজডাঙা বিদ্যাপীঠে শ’দুয়েক বাসিন্দাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্যোগের কারণে কারও আশ্রয়ের দরকার হলে আর্টস বিল্ডিংয়ের একতলা

এবং অডিটোরিয়ামে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Fani ফণী Tala Tank Crane
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE