Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

রবিবার কন্ট্রোল রুম বা ডিসি কাউকেই হামলার কথা জানাননি টালিগঞ্জের ওসি, জমা পড়ল রিপোর্ট

প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওসি ছাড়া মাত্র ১০ জন পুলিশ কর্মী ওই রাতে ছিলেন টালিগঞ্জ থানায়।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ২১:২৭
Share: Save:

থানায় ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে, সোমবার সকাল সওয়া দশটা পর্যন্ত সে কথা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি কলকাতা পুলিশের কোনও শীর্ষ কর্তা। টালিগঞ্জ থানার ওসি অনুপকুমার ঘোষ কাউকে হামলার ঘটনা জানাননি। এমনটাই টালিগঞ্জ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন ডিসি (দক্ষিণ) মীরাজ খালিদ। পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নির্দেশে এ ব্যাপারে ওসিকে কারণ দর্শাতে বলা হয় সোমবার। লালবাজার সূত্রে খবর, একইসঙ্গে বিভাগীয় ডিসি-কেও তথ্যানুসন্ধান করে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেন নগরপাল। সেই রিপোর্টই মঙ্গলবার কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছেন ডিসি (দক্ষিণ)।

লালবাজার সূত্রে খবর, ওই রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে রবিবার রাতে টালিগঞ্জ থানায় হামলার সময়ে বা তার পরে কলকাতা পুলিশের সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী কন্ট্রোল রুমকে জানানোর কথা ছিল থানার ওসির। কিন্তু অনুপকুমার ঘোষ ওসি কন্ট্রোলকে হামলার বিষয়ে কোনও তথ্য দেননি। নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় কন্ট্রোল রুম অর্থাৎ দক্ষিণ ডিভিশনের কন্ট্রোল রুমকে জানানোর কথা ছিল ওসির। কিন্তু সেখানেও কোনও তথ্য দেননি তিনি। পুলিশেরই একটা অংশ মনে করছে, ওই ওসি নিয়ম ভেঙেছেন। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘সোমবার সকালে রেড রোডে নমাজ শেষ হওয়ার পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনও খবর ছিল না ওই ঘটনা সম্পর্কে।”

অন্য দিকে, প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওসি ছাড়া মাত্র ১০ জন পুলিশ কর্মী ওই রাতে ছিলেন টালিগঞ্জ থানায়। রাতে সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী ছিলেন না। মহিলারা থানায় ঢুকে হামলা করার পর প্রথমে ঘাবড়ে যান পুলিশ কর্মীরা। কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী থানায় না থাকায় প্রথমে প্রতিরোধও করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে ওই রিপোর্টে। পরে পরিস্থিতি বেগতিক হলে, ওই একই চত্বরে থাকা টালিগঞ্জ মহিলা থানা থেকে দুই পুলিশ কর্মী সাহায্য করতে আসেন। কিন্তু প্রায় ১৫-২০ জন মারমুখী মহিলাকে ঠেকাতে ব্যর্থ হন ওই দুই মহিলা পুলিশ কর্মী। সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন থানায় ওই রাতে এক জনও মহিলা পুলিশ কর্মী ছিলেন না?

আরও পড়ুন: স্পিকারও পারলেন না, তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে ইস্তফা শোভনের

আরও পড়ুন: দেড় দিন পর টালিগঞ্জ কাণ্ডে ধৃত মূল চক্রী পুতুল, এখনও অধরা ভাইপো আকাশ

আরও পড়ুন: হামলার নেতৃত্বে ভাইপো, নেপথ্যে ডন পিসি, প্রভাবশালী নেতার প্রশ্রয়েই টালিগঞ্জ কাণ্ড?

লালবাজার সূত্রের খবর, ডিসি-র রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে সোমবার সকালেও ওসির কাছ থেকে ওই ঘটনা সম্পর্কে তিনি কোনও তথ্য পাননি। অথচ রবিবার রাতে টালিগঞ্জ থানা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এসএসকেএম চত্বরে হাজির ছিলেন ডিসি নিজে, হাসপাতালে গন্ডগোল ঠেকাতে। সেখানে হাজির ছিল বিভাগীয় এইচআরএফএস (হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড)। ঘটনার সময় খবর পেলে দ্রুত অতিরিক্ত বাহিনী পৌঁছতে পারত টালিগঞ্জ থানায়।

পুলিশের একটা অংশের মতে, কমিশনার অনুজ শর্মা বার বার ওসি-দের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মানার নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও সেই নির্দেশ অমান্য করার জন্য কড়া শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ওসি অনুপকুমার ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tollygunge Kolkata Police Crime Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE