মৃত রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল প্রাক্তন এক ফুটবলারের। শুক্রবার রাতে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার লেকগার্ডেন্স স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধার থেকে রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় (৩০) নামে ওই ফুটবলারের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, রঞ্জিতকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
দক্ষিণ কলকাতার চারু মার্কেট এলাকার সুলতান আলম রোডে থাকতেন রঞ্জিত। অনূর্ধ্ব-১৬ বাংলা ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। এ ছাড়া দীর্ঘ দিন তিনি পোর্ট ট্রাস্ট, সালকিয়া-সহ বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন। কলকাতা পুলিশের হয়ে ‘ফ্রেন্ডশিপ কাপ’-এ খেলার পর জার্মানিতে গিয়ে প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন রঞ্জিত। কিন্তু, কিছু দিন আগে খেলতে গিয়ে পায়ে চোট পান। এর পর পাড়াতে একটি ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেন। পাশাপাশি, সংসার চালানোর জন্য অটোও চালাতেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আর একটি অটো কেনার জন্য এক ব্যক্তিকে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছিলেন রঞ্জিত। কিন্তু, বার বার বলা সত্ত্বেও নতুন অটো কিছুতেই হাতে পাচ্ছিলেন না। এই বিষয় নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর ঝামেলাও হয়। পরিবারের আরও দাবি, র়ঞ্জিত আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। তাঁকে কখনও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে অন্য কারও হাত রয়েছে। রঞ্জিতকে কেউ খুন করেছে বলেই ওই পরিবারের অভিযোগ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাজিলের খেলা শুরুর আগে কয়েক জন রঞ্জিতকে ডাকতে এসেছিলেন। কিন্তু, তিনি তখন তাঁদের সঙ্গে যাননি। পরে খেলা দেখা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বচসা হওয়ায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। কিছু ক্ষণ পরে ফিরেও আসেন। খেলার শেষ অংশ দেখে ফের বেরিয়েও যান। এর পরেই রাত ১০টা নাগাদ বাড়িতে খবর আসে, লেক গার্ডেন্স স্টেশনের কাছে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে রয়েছে। খবর যায় রেল পুলিশের কাছেও। তারা রঞ্জিতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে টেলি অভিনেত্রীর ফ্ল্যাটে ঢুকে হামলা, শ্লীলতাহানি
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দিন রাতে লেকগার্ডেন্স স্টেশনের কাছে ট্রেনে কাটা পড়ে রঞ্জিতের মৃত্যু হয়। কিন্তু, সেটি দুর্ঘটনা না কি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখছে রেল। তবে তদন্তে নেমে রেলপুলিশ রঞ্জিতের বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’। এমনকি, ওই দিন রাতে রঞ্জিত তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে একটি এসএমএস-ও করেছিলেন বলে জানতে পেরেছে রেলপুলিশ। সেখানেও তিনি একই বয়ান লিখেছিলেন। তবে, রঞ্জিতের পরিবার ও প্রতিবেশীরা এই ঘটনাকে আত্মহত্যা মানতে নারাজ। তাঁর এক প্রতিবেশী বাবাই শীল বলেন, “ফুটবল নিয়ে মেতে থাকত। ও আত্মহত্যা করতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: সিনেমায় সুযোগের টোপ, যৌন সম্পর্কের জন্য চাপ! গ্রেফতার চিত্র পরিচালক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy