—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিনের নিয়ম ছিল, পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি অঙ্কের কাজের বরাত দিতে হলে ই-টেন্ডার আবশ্যিক। সেই ঊর্ধ্বসীমা এক ধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে ‘কড়া’ হতে চলেছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ১০ হাজার টাকার উপরে যে কোনও কাজের জন্য ই-টেন্ডার বাধ্যতামূলক করতে হবে। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে পুর প্রশাসন। এক আধিকারিক জানান, দরপত্রের মাধ্যমে কাজে স্বচ্ছতা আনতেই এমন নিয়ম।
এত দিন সে কথা ভাবা
হয়নি কেন?
পুর আধিকারিকদের একাংশের যুক্তি, এমনিতেই কাটমানি নিয়ে হইচই চলছে রাজ্য জুড়ে। রীতিমতো প্রচার করে পুর কর্তৃপক্ষকে বলতে হচ্ছে, ‘কাউকে কাটমানি দেবেন না।’ তাঁরা বলছেন, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার ‘রেওয়াজ’ পুরসভায় অনেক দিনের। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কাজ করতে ইচ্ছুক অনেককে টেন্ডারে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। কোটেশন জমা দেওয়ার আগেই ভয় দেখিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুরসভায় একাধিক অভিযোগও জমা পড়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।
আগামী বছর পুরভোট। তার আগে শাসক দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উপরে জোর দিতে চায় সরকার। পুরসভার অন্দরের খবর, সে সব কথা মাথায় রেখে ই-টেন্ডারের ঊর্ধ্বসীমা আরও কমিয়ে আনার এই সিদ্ধান্ত। যদিও পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানান, ই-টেন্ডারে অনেকেই অংশ নিতে পারেন। তাতে দর কমার সম্ভাবনা থাকে। একই সঙ্গে কোনও কাজের জন্য বরাদ্দের পরিমাণও কমতে পারে। যে কোনও প্রশাসনের কাছেই তা কাম্য।
তবে এর পাশাপাশি অন্য একটি বিষয়ও ভাবাচ্ছে পুর প্রশাসনকে। সেটি হল, পুর পরিষেবার অনেক ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হয়। তেমন কাজ চলে প্রায় সারা বছর। এত দিন ওই সব কাজের ক্ষেত্রে প্রথাগত দরপত্র ডাকার মধ্যে না গিয়ে তিনটি কোটেশন নিয়ে বরাত দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। কেন দরপত্র ডাকা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলা হত, সংশ্লিষ্ট ওই পরিষেবা জরুরি আওতায় পড়ে। সে কারণে এমন করতে হয়েছে। পুরসভার একাধিক দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের কথায়, রাস্তা মেরামতি, জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার-সহ ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের মতো কাজে নিয়ম মেনে দরপত্র ডেকে বরাত দিতে বহু সময় নষ্ট হত। ফলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দরপত্র ছাড়াই করানো হত ওই সব কাজ। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে সেই কাজগুলি শিকেয় উঠবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। এ ব্যাপারে
পুরসভার এক আমলা জানান, পাঁচ লক্ষ টাকার কম অঙ্কের জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে পুর কমিশনার বা বিশেষ পুর কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে। যদিও সেই ধরনের কাজ তুলনায় কমই থাকে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy