প্রতীকী ছবি।
শহরে আবার ফিরছে সাইরেন।
তবে শুধু সাইরেনের ‘ভোঁ’-ই নয়। থাকবে সতর্কতামূলক ঘোষণাও। বড় কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জরুরি বিপদে মানুষকে সজাগ করতেই সাইরেন ব্যবস্থা নতুন করে চালু করতে চলেছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। এ জন্য নবান্নে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বেশ কয়েক বছর আগেও কলকাতার বেশ কিছু থানা, জুটমিল এবং বড় কারখানায় সকালে-বিকেলে সাইরেন বাজত। তবে সেটা মানুষের ঘড়ির সময় মেলানোতেই বেশি কাজে লাগত। মিলে বা কারখানায় সকালের শিফ্ট শুরু বা শেষের কিছু আগে সাইরেন বাজানো হত শ্রমিকদের সজাগ করতে। নানা কারণে সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু বছর। কিন্তু নবান্ন মনে করছে, কলকাতার জনবসতি যে ভাবে বাড়ছে তাতে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা বড় দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এখন সাইরেনের প্রয়োজন রয়েছে। যাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, ভূমিকম্প বা কোনও এলাকায় বিধ্বংসী আগুন লাগলে সাইরেন বাজিয়ে এবং ঘোষণার মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া যায়। এ জন্য খরচ হবে ৪-৫ কোটি টাকা।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান জানিয়েছেন, রাজ্যের সর্বত্রই তাঁরা ব্যবস্থাটি চালু করতে চেয়ে কয়েক বছর আগে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সাহায্য না মেলায় আপাতত নিজেদের উদ্যোগেই কলকাতায় সাইরেন ব্যবস্থা চালু করতে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার পর হাওড়া, হুগলি-সহ আশপাশের জেলাগুলিতেও সাইরেন লাগানো হবে। এ বছরের শেষে অন্তত কলকাতায় সাইরেন চালু করে দেওয়ার ইচ্ছে আছে।’’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আকাশে জাপানিদের যুদ্ধ বিমান দেখা গেলে মানুষকে সতর্ক করতে কলকাতায় সাইরেন বাজত। ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে ইন্দো-পাক যুদ্ধের সময়েও কলকাতা, হাওড়ায় সাইরেন বাজার চল ছিল।
নতুন ব্যবস্থাটি চালু করতে নবান্নে একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। সেখান থেকেই একটি বোতাম (জেলার নামে) টিপেই ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় সাইরেন বাজানো হবে। তার জন্য এক জন আধিকারিককেও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে। দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, কলকাতায় বিভিন্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ৪৫-৫০টি সাইরেন লাগানো হবে। তবে সেগুলির শব্দের তীব্রতা এমন মাত্রায় রাখা হবে যাতে কোনও শব্দ দূষণ না হয়। কিন্তু আড়াই-তিন বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষ সেই সাইরেনের শব্দ এবং ঘোষণা
শুনতে পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy