ডেঙ্গি প্রতিরোধে ডাকা রাজ্য সরকারের বৈঠকে পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব সুব্রত গুপ্ত জনপ্রতিনিধিদের বলেছিলেন, তালাবন্ধ ঘরে ডেঙ্গিবাহী মশার বংশবিস্তারের পরিবেশ তৈরি হয়ে থাকলে তালা ভেঙে মশা মারার কাজ করতে হবে। কলকাতা পুরসভার কমিশনারও বলেছেন, সরকারি অফিস, বাড়ি বা যে কোনও জায়গাই হোক, মশা নিধনের কাজে প্রয়োজনে তালা ভেঙে ঢুকে পড়তে হবে। কিন্তু ঘোষণার পরেও কতটা কাজ হচ্ছে, তার নমুনা মিলল উত্তর কলকাতার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বছর দশেকের এক বালিকার মৃত্যুর ঘটনায়। মৃতার পরিবার এবং বাসিন্দাদের অভিযোগ, জগন্নাথ শূর লেনের যে বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটেছে, তার পাশেই একটা বন্ধ তিনতলা বাড়ির ছাদে বেড়ে উঠেছে গাছপালা। ভিতরে জল জমে মশার আঁতুরঘর তৈরি হয়েছে।
কিন্তু বাইরে থেকে কিছু করার নেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রচারই সার। তালা ভাঙার কোনও উদ্যোগই দেখা যায়নি। ঘোষণা মাফিক কাজ করেনি পুরসভা।
ওই পাড়ায় একাধিক তালাবন্ধ বাড়ি রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, ব্লিচিং ছড়ানো কিংবা আবর্জনা জমতে না দেওয়ার কাজ পুরসভা করলেও তালাবন্ধ বাড়িগুলি
আবর্জনার স্তূপ হয়ে রয়েছে। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাড়িগুলি আগাছায় ভর্তি হয়ে আছে। ভিতরে আবর্জনা জমে রয়েছে বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। বুধবার রাতে ওই এলাকার বাসিন্দা, বছর দশেকের পরিস্মিতা ঘোষ ডেঙ্গিতে মারা যায়। সোমবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিল। অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে ইএম বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার রাতে সেখানেই সে মারা যায়। ডেথ সার্টিফিকেটেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘সিভিয়ার ডেঙ্গি’র উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে বন্ধ থাকা বাড়ির ভূমিকা নেই বলেই দাবি করেছেন এলাকার কাউন্সিলর মোহন গুপ্ত। তবে তালাবন্ধ বাড়ির ভিতরে পুরসভার কর্মীদের ঢোকা জরুরি বলেই মনে করেন তিনি। মোহনবাবু বলেন, ‘‘ওই বাড়ি নিয়ে মামলা চলছে। পুলিশকে বলেছিলাম তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকার কথা। কিন্তু মামলা চলায় সাহস হয়নি।’’ তবে কিশোরীর মৃত্যুর পরে পাড়ার বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে। মোহনবাবু বলেন, ‘‘এ বার আর বসে থাকব না। তালা ভেঙে ঢুকব ওই বাড়িতে। মশা নিধনের কাজ করবেন পুরকর্মীরা। তাতে আইন ভাঙার অভিযোগ উঠলে মোকাবিলা করব।’’ তবে এই উদ্যোগ আগে দেখা গেল না কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কোনও জবাব মেলেনি কাউন্সিলরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy