Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রক্ষীর কাজ ছেড়ে পরিচালনায় ফিরছেন সুব্রত

৬২ বছরের সুব্রতবাবু টালিগঞ্জ পাড়ায় পরিচিত মুখ হলেও তিনি যে এখন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছেন, সে খবর জানতেন না চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই। সুব্রতবাবুর পরিচালিত ছবি ‘প্রবাহিণী’-তে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পাপিয়া অধিকারী।

এক আবাসনে রক্ষীর কাজ করছিলেন সুব্রতবাবু। নিজস্ব চিত্র

এক আবাসনে রক্ষীর কাজ করছিলেন সুব্রতবাবু। নিজস্ব চিত্র

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

সিনেমার জগতেই আবার ফিরে যাচ্ছেন সুব্রতরঞ্জন দত্ত। তাই ছেড়ে দিচ্ছেন আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ। শুক্রবার তিনি বলেন, “ছবি পরিচালনার বিষয়ে এক জায়গায় কথাবার্তা অনেকটা এগিয়েছে। আরও কয়েকটি জায়গা থেকে কাজের সুযোগ এসেছে। ভিআইপি রোডের একটি আবাসনে যে কাজ আমি করতাম, সেটা আপাতত ছেড়ে দিচ্ছি।” যে নিরাপত্তা সংস্থার হয়ে সুব্রতবাবু কাজে ঢুকেছিলেন, সেই সংস্থার মালিক কল্যাণচন্দ্র পাল বলেন, “উনি যে এক সময়ে ছবি পরিচালনা করতেন, তা আমরা জানতাম না। কাগজে পড়ে জানতে পারি। এ রকম এক জন মানুষ নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করবেন কেন? ওঁকে আমরা এই কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছি। তবে যে কোনও প্রয়োজনে আমরা ওঁর সঙ্গে থাকব।”

৬২ বছরের সুব্রতবাবু টালিগঞ্জ পাড়ায় পরিচিত মুখ হলেও তিনি যে এখন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছেন, সে খবর জানতেন না চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই। সুব্রতবাবুর পরিচালিত ছবি ‘প্রবাহিণী’-তে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পাপিয়া অধিকারী। পাপিয়াদেবী বলেন, “ওই খবরটা পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি! আমরা সবাই মিলে খুব খেটে ওঁর পরিচালনায় ‘প্রবাহিণী’ ছবিটা করেছিলাম। ওঁর মতো ভদ্র মানুষকে বাঁচার জন্য নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতে হচ্ছে জেনে খুবই কষ্ট পেয়েছি। তবে উনি যে আবার কাজে ফিরে আসতে চলেছেন, এটা জেনে খুব খুশি হয়েছি। ফের ওঁর সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রইলাম।”

সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার টালিগঞ্জের একটি সংস্থার সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়েছে। ওই সংস্থাই তাঁর পরবর্তী ছবি প্রযোজনা করতে পারে। ওই সংস্থার তরফে মলি পাল বলেন, “সংবাদপত্রে খবরটা দেখে ওঁর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি। ওঁকে আমরা ছবি পরিচালনার কাজ দেব। কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়েছে। কোন গল্প থেকে ছবি হবে, তা নিয়ে আগামী সপ্তাহেই আমরা আলোচনায় বসব।”

টালিগঞ্জের ‘ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিমল দে-ও জানান, সুব্রতবাবুর কাজ পাওয়ায় তিনি খুব খুশি। বিমলবাবুর মতে, এখানকার চলচ্চিত্র শিল্পের প্রকৃত ছবিটা কী, এই খবরই তা প্রকাশ্যে এনে দিল। সুব্রতবাবু একা নন, এমন বহু গুণী মানুষই কাজ না পেয়ে বসে রয়েছেন। তাঁদের বাড়িতেও প্রবল অভাব-অনটন রয়েছে। বিমলবাবু বলেন, “ইন্ডাস্ট্রির এক শ্রেণির মানুষের দাদাগিরিতেই আজ এই দৈন্য দশা। ‘দাদাদের লোক’ না হলে টালিগঞ্জে কাজ মিলবে না। ছবি মুক্তি পেলে তা দেখানোর জন্য সিনেমা হলে শো পর্যন্ত পাবেন না পরিচালক।” বিমলবাবু জানান, তাঁদের এই নানা অভাব অভিযোগ নিয়ে বেশ কয়েক বার সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Film Director Security Guard
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE