আগুন এসডিএফ বিল্ডিংয়ে।—ফাইল চিত্র।
শিল্পতালুক পাঁচ নম্বর সেক্টরের একটি বহুতল অফিসবাড়ির একটি অফিসে সম্প্রতি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে আগুন লেগেছিল। তার জেরে সেখানে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে ওই তলার অনেকটা জায়গা জুড়েই। দমকল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন আয়ত্তে আনার আগে কিন্তু সেখানে অল্প-বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। প্রায় একই ঘটনা ঘটে কয়েক দিন আগে নিউ টাউনের একটি বিলাসবহুল হোটেলের স্পা-তে। শুধু অফিস কিংবা হোটেলই নয়, আবাসিক বাড়ি এমনকি সরকারি হাসপাতালেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।
দমকল কর্মীরা জানাচ্ছেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করলে তা থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মধ্যে সাধারণত এখনকার দিনে স্প্লিট এসি আবাসিক বাড়িতে এবং অফিস কিংবা হাসপাতালে উইন্ডো এসি-র ব্যবহার হয়। স্প্লিট এসির ক্ষেত্রে কুলিং ইউনিট থাকে বাইরে। উইন্ডো যন্ত্রটি কিছুটা ঘরের ভিতর এবং কিছু বাইরে থাকে। অনেক ক্ষণ ব্যবহারে যে কোনও যন্ত্রই গরম হয়। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে যন্ত্রের ভিতরে ধুলো জমে যায়। যা আগুন লাগার জন্য সহায়ক বলেই দমকলকর্মীরা মনে করেন।
শীতাতপ যন্ত্র মেরামতির কাজে যুক্ত লোকজনের কথায়, ‘‘অনেক বাড়িতেই এসি মেরামত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে ধুলো জমে আগুন লাগার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে রয়েছে। অনেকেই এ নিয়ে সচেতন নন।’’
পাল্টা নাগরিকদের একাংশের মতামত হল, প্রশিক্ষিত এসি মেকানিকদের মতো সাফাই করা সাধারণ লোকজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে স্প্লিট এসির বাইরের অংশ বহুতলের কার্ণিশে বসানো থাকে। এক জন গৃহস্থের পক্ষে তা সাফাই করা সম্ভব হয় না। এমনকি এসি-র বাইরের ইউনিট ছাদে বসালেও কায়দা না জেনে তা সাফাই করাও সম্ভব নয়।
দমকলের প্রাক্তন অধিকর্তা গোপাল ভট্টাচার্য জানান, এসি মেশিনের ক্ষেত্রে সঠিক গুণমানের বৈদ্যুতিক তারের ব্যবহার
প্রয়োজন। কেননা, ভোল্টেজ বেড়ে গেলে তার গরম হয়ে যায়। ফলে তারের গুণমান ঠিক না হলে সমস্যা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক সংস্থার যন্ত্রাংশ জুড়ে একটি ‘এসি ইউনিট’ তৈরি করা হয়। সে সব ক্ষেত্রে যন্ত্রাংশের গুণমান ঠিক না হলে আগুন লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার এসি মেশিনের জন্য পৃথক লাইন বিদ্যুতের মূল সংযোগের সঙ্গে যুক্ত করা প্রয়োজন।
দমকলের আর এক প্রাক্তন অধিকর্তা বিভাস গুহ জানান, বর্তমানে বহু জায়গাতেই শীতাতপ যন্ত্র কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সে সব ক্ষেত্রে স্মোক ডিটেক্টর-সহ অন্যান্য যন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করছে কি না সে সব সব সময় নজরদারি রাখতে হবে।
সম্প্রতি রাজ্যের দমকল বিভাগ ফায়ার অডিটের কাজ শুরু করেছে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘এসি মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, সঠিক গুণমানের বৈদ্যুতিক তার না ব্যবহারের মতো বিভিন্ন কারণ ফায়ার অডিটে উঠে আসছে। এ হেন গাফিলতি সংশোধন করতে আবেদন করা হচ্ছে। তাতে সাড়া না পেলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। এ সব নিয়ে সচেতনতার প্রচারও চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy