বিধ্বংসী: জ্বলছে সেই কারখানা। রবিবার রাতে, বেহালায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই বিধ্বংসী আগুন লাগল একটি রাসায়নিকের কারখানায়। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বেহালার চণ্ডীতলায়। দমকলের দশটি ইঞ্জিন অনেক রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চালায়। অবশেষে রাত সওয়া দশটা নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কারখানাটিতে রং এবং থিনারের মতো দাহ্য রাসায়নিক রাখা ছিল। তার ফলেই অল্প সময়ের মধ্যে মারাত্মক আকার নেয় আগুন। একই কারণে আগুন নেভাতেও বেগ পেতে হয়েছে বলে জানিয়েছে দমকল।
স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরাই প্রথম আগুন দেখতে পান। তাঁরাই পুলিশ, দমকল ও সিইএসসি-কে খবর দেন। ওই ক্লাবের সদস্য রাজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ক্লাবে বসে ছিলাম। হঠাৎ বিকট পোড়া গন্ধ পাই। বেরিয়ে এসে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারখানাটি ঘিঞ্জি বসতি এলাকার মধ্যে। এ দিকে, আগুন এতটাই দ্রুত ছড়াতে শুরু করে যে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে থেকেও দেখা গিয়েছে তার শিখা। ফলে আগুনের খবর পাওয়া মাত্রই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সেই আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছিল দুম দুম শব্দে রাসায়নিক ভর্তি ড্রামের বিস্ফোরণ। আগুনের তাপে পাশের একটি কারখানাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়েরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই কারখানাটির পিছনেই দু’টি রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থার গ্যাসের গুদাম রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়লে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারত। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। ঘটনাস্থলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং দমকলের ডিজি জগমোহন। দমকল সূত্রের খবর, শুধু জল দিয়ে রাসায়নিকের আগুন নেভাতে সমস্যা হওয়ায় আনা হয় ফোমও।
এর পরে অনেকটা রাতে দমকলমন্ত্রী জানান, আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ১০০০ লিটার ফোম আনা হয়েছিল। তিনি জানান, কাছেই একটি বস্তি রয়েছে। সেখানে যাতে আগুন না ছড়ায়, তার জন্য লাগাতার লড়ে গিয়েছেন দমকলকর্মীরা।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই কারখানাটিতে আগেও আগুন লেগেছিল। তার পরেও সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিক কোনও ব্যবস্থা নেননি। কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। কী ভাবে আচমকা আগুন লাগল, তা নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছেন স্থানীয়দের অনেকে। এই কারখানায় আগে আগুন লাগার কথা জানিয়েছেন দমকলমন্ত্রীও। মন্ত্রী বলেন, ‘‘কী ভাবে আগুন লাগল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমি দমকলের ডিজিকে বলেছি, কী ভাবে আগুন লাগল এবং কারখানার অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিক ছিল কি না, তা বিশদে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি কোনও গাফিলতি থাকে, তা হলে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy