Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ কারখানার জমি ফেরাতে উদ্যোগী রাজ্য

অবশেষে আশার আলো দেখল বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল। হাসপাতাল সংলগ্ন বন্ধ ইন্দো-জাপান ইস্পাত কারখানার জমি যাতে সরকার ফিরিয়ে নেয়, তার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন হাসপাতালের কর্মীরা। তাঁরা এক সময়ে ওই বন্ধ কারখানাটিরই কর্মী ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলুড় শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০১:৩৭
Share: Save:

অবশেষে আশার আলো দেখল বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল।

হাসপাতাল সংলগ্ন বন্ধ ইন্দো-জাপান ইস্পাত কারখানার জমি যাতে সরকার ফিরিয়ে নেয়, তার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন হাসপাতালের কর্মীরা। তাঁরা এক সময়ে ওই বন্ধ কারখানাটিরই কর্মী ছিলেন। আন্দোলনকারীদের সেই দাবি মেনেই এ বার জমি ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার। বুধবার সকালে বেলুড়ের ওই কারখানায় এসে জমি ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা।

মাসখানেক আগেই বন্ধ কারখানার প্রায় ১৪ বিঘা জমি ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একটি আদেশনামা জারি করেছিল রাজ্য ভূমি দফতর। কিন্তু এর পরে সরকারি ভাবে তেমন কিছু না হওয়ায় কিছুটা সংশয়ে ছিলেন শ্রমজীবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও শ্রমজীবী স্বাস্থ্য প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। ওই দিন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা বন্ধ কারখানায় এসে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পরে ইন্দো-জাপান স্টিল্‌স লিমিটেড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ও শ্রমজীবী হাসপাতালের কর্মকর্তা ফণিগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরকারি আধিকারিকেরা এসে জমি ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় আমরা খুব খুশি। অসাধু চক্রান্তের
হাত থেকে জমি বাঁচানোর যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম, তার অনেকটাই
সফল হল।’’

বেলুড়ে জি টি রোডের উপরেই রয়েছে বন্ধ ওই কারখানা। কারখানার জমিরই একাংশে গড়ে উঠেছিল শ্রমজীবী হাসপাতাল। ১৯৯৬ সালে ইন্দো-জাপান কারখানা লিকুইডেশনে চলে যায়। ২০০৭-এ কলকাতা হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে কারখানার সব অস্থায়ী সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করা হয়। এর পর থেকেই জমির মালিকানা নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। গ্রান্ড স্মিিথ নামে এক সংস্থা দাবি করে তারাই বন্ধ কারখানার মালিক। কিন্তু এ কথা মানতে চান না ইন্দো-জাপানের শ্রমিকেরা। তাঁরা দাবি করেন, ওই জমিটি খাস এবং তার মালিক খোদ রাজ্য সরকার। এর পরেই শুরু হয় শ্রমজীবী হাসপাতালের কর্মী এবং শ্রমজীবী স্বাস্থ্য প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজনদের আন্দোলন। তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে বন্ধ কারখানার ওই জমি খাস করার দাবি জানান। অন্য দিকে, জমিতে আবাসন গড়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো শুরু হয়। শেষে গ্রান্ড স্মিিথ এবং শ্রমজীবী হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, বন্ধ ইন্দো-জাপান কারখানার জমিটি খাস। গত ২০ মার্চ রাজ্য ভূমি দফতর ওই জমি ফিরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করে।

সেই আদেশ অনুসারেই ওই দিন বালি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে বন্ধ ইন্দো-জাপান কারখানায় আসেন হাওড়ার মহকুমা ভূমি আধিকারিক ও সমষ্টি ভূমি আধিকারিক। তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন জমি দখলে রাখা গ্রান্ড স্মিথি সংস্থাকে। হাওড়ার অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমিসংস্কার) অংশুমান অধিকারী বলেন, ‘‘আনুষ্ঠানিক ভাবে ইন্দো-জাপানের ১৪ বিঘা জমি সরকারের অধীনে ফিরিয়ে নেওয়া হল।’’ তবে, ওই দিন আদেশনামায় সই করতে রাজি হননি ওই বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁরা দাবি করেন, ‘‘সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এলআরটি-তে মামলা করা হয়েছে।’’

শ্রমজীবী হাসপাতালের আর এক সংগঠক গৌতম সরকার বলেন, “জমিটি আমাদের দিতে সরকারকে আবেদন করেছি। যদি ওঁরা তা মেনে নেন তবে আরও বড় ও উন্নত মানের একটি হাসপাতাল বানানো যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE