Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জলাশয় সংস্কার নিয়ে দমদম পুরসভাকে ভর্ৎসনা

পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কালীবাবুর পুকুর এবং নবপল্লি স্পোর্টিং ক্লাবের পুকুর বোজানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

এমনই বেহাল দশা নবপল্লি স্পোর্টিং ক্লাবের পুকুরটির। নিজস্ব চিত্র

এমনই বেহাল দশা নবপল্লি স্পোর্টিং ক্লাবের পুকুরটির। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০২:৩৪
Share: Save:

মশাবাহিত রোগ যাতে না ছড়ায় সে জন্য জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে দ্রুত জলাশয় সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তা কার্যকর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল দমদম পুরসভা।

জলাশয় যে পরিষ্কার হয়েছে, এ দিন তা বোঝাতে কয়েকটি স্থির চিত্র শুনানির শুরুতেই আদালতে জমা করেন পুরসভার আইনজীবী অমলেশ রায়। এর পরেই পুকুর পাড়ে কী ভাবে আবর্জনা স্তূপাকৃত হয়ে পড়ে রয়েছে, ভিডিয়ো ফুটেজের সাহায্যে তা আদালতে তুলে ধরেন মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। পরে তিনি বলেন, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’টি জলাশয় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। না হলে অপরাধযোগ্য ধারায় পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।’’ এ দিন পুরসভার আইনজীবী বলেন, ‘‘এক দিকের ঘাট এখনও পরিষ্কার না হওয়ায় ২৮ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছে আদালত।’’ রায়ের প্রতিলিপি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করতে চাননি দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান হরীন্দ্র সিংহ।

পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কালীবাবুর পুকুর এবং নবপল্লি স্পোর্টিং ক্লাবের পুকুর বোজানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দু’বছর আগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের এজলাসে এ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ২০১৬ সালের মার্চে দু’টি জলাশয় সংস্কারের নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না, এই অভিযোগে ওই বছরই বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন আবেদনকারী বিশাখ ভট্টাচার্য।

বাসিন্দাদের উদ্দেশে জলাশয়ে আবর্জনা না ফেলার আর্জি জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পর্ণা দাস। তবে সেখানে হাইকোর্টের নির্দেশের কোনও উল্লেখ নেই। গত জুলাইয়ে ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছিল, ‘এটা খুবই আশ্চর্যের, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বিজ্ঞপ্তি টাঙানো ছাড়া বিশেষ কিছু করেনি পুরসভা’। এর পরে গত ১৬ মে বিচারপতিরা আবেদনকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দমদম পুরসভাকে তাঁদের বক্তব্য ১১ জুনের মধ্যে লিখিত আকারে জমা দিতে বলেছিলেন।

মানিকপুরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলাশয় দু’টি বুজিয়ে সেখানে নির্মাণ কাজ করার উদ্দেশেই সংস্কার ঠিক মতো হচ্ছে না। গত শনিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই অভিযোগ স্থানীয়দের। বাসিন্দাদের দাবি, ওই দিন পুরসভা যন্ত্র দিয়ে জলাশয় পরিষ্কার করে আবর্জনা পাড়ে রাখছিল। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর যন্ত্রের সাহায্যে জলাশয় পরিষ্কারে বাধা দেন। তাঁদের দাবি, বৃষ্টি হলে তো পাড়ের ময়লা পুকুরেই পড়বে। তাহলে পরিষ্কার করার মানে কী?’’ যার প্রেক্ষিতে পর্ণা বলেন, ‘‘যন্ত্র যাতে পাঁকে আটকে না যায়, সে জন্য সতর্ক করেছিলাম। রাজ্য সরকারের নীতি মেনে আমরাও জলাশয় বোজাতে চাই না। আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। বিচারাধীন বিষয়ে বেশি কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dumdum municipality High Court Ponds Garbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE