পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। —ফাইল চিত্র।
ভর্তি জট কাটাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসমিতি দীর্ঘসময় ধরে বৈঠকের পরেও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে নি। তবে, আলোচনার গতিপ্রকৃতি যেদিকে গড়িয়েছে তাতে ৫০:৫০ সূত্রেই সমাধান মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ আলোচনায় বসেন কর্মসমিতির সদস্যরা। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বৈঠকে বসার আগে অনশনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। এ দিকে অনশনরত দুই পড়ুয়া মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই নিয়ে তিন জন অনশনকারী অসুস্থ হলেন।
আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা চাইছেন, প্রবেশিকাই ফিরিয়ে আনা হোক। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে এ বছর উচ্চমাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তির নিময়ই বহাল থাকুক। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও তেমনই ইচ্ছে।
মনে করা হয়েছিল আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এই বিতর্কের অবসান ঘটাবেন। কিন্তু তিনি উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন। এখন যাবতীয় সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা তো সুরঞ্জন দাসের হাতেই আছে: কেশরীনাথ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কলা বিভাগে ভর্তি নিয়ে মাঝামাঝি কোনও পথ বের করতে চাইছেন উপাচার্য। যাতে আন্দোলন থেকে পড়ুয়ারা সরে আসতে রাজি হয়, আবার ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর ইচ্ছেরও গুরুত্ব থাকে ।
মিছিলে যাদবপুরের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার।
কি সেই পথ? কর্ম সমিতির বৈঠকে ৫০:৫০ ফর্মুলাই কার্যকর হওয়ার সম্ভবনা সব থেকে বেশি। ‘অ্যাডমিশন টেস্ট’-এর ফলের সঙ্গে বোর্ডের পরীক্ষার ফল যোগ করে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। বোর্ডের পরীক্ষার ৫০ শতাংশ ও প্রবেশিকা পরীক্ষার ৫০ শতাংশের যোগফল থেকে তৈরি হবে সেই মেধা তালিকা।
আরও পড়ুন: কার ‘মন’ পেতে চান যাদবপুরের মনোজিৎ, প্রশ্ন পোস্ট ঘিরে
এর পরেও যদি দেখা যায়, কর্ম সমিতির বৈঠকে সদস্যরা একমত হতে পারলেন না। অথবা আন্দোলনকারীরা নিজেদের অবস্থান থেকে না সরেছেন না। তাহলে শেষ পর্যন্ত পদ্যত্যাগের পথই বেছে নিতে পারেন উপাচার্য। কারণ তিনি আর যাদবপুরের সুনাম নষ্ট হতে দিতে রাজি নন। পঠনপাঠনের পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনার পক্ষে।
অনশনরত দুই পড়ুয়া মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কলা বিভাগে ছ’টি বিভাগে শুধু প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হোক, এখনও চাইছেন না শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বরবারই নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির পক্ষে। যদিও শিক্ষক সমিতি সংগঠন জুটার দাবি, প্রবেশিকাই হোক মেধার মানদণ্ড। পড়ুয়ারাও তাই চাইছেন। চাপের মুখে পড়ে আগের নিয়ম ফিরে আসে কি না, তা এখন দেখার। যদিও সেই সম্ভাবনা খুবই কম।
এর আগে দু’বার সিদ্ধান্ত নিয়েও নিজেদের অবস্থান বদলাতে হয়েছে যাদবপুরকে। কলা বিভাগের বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, তুলনামূলক সাহিত্যে বিষয়ে ভর্তি-পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরও পিছিয়ে আসতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে গত ৯ জুন নোটিস দিয়ে জানানো হয়, কলা বিভাগে ৩-৫ জুলাই স্নাতক স্তরে ‘অ্যডমিশন টেস্ট’ নেওয়া হবে। এ পর ফের নিময় বদল হয়। এখন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১২ জুলাই পর্যন্ত ফর্ম ফিল-আপ চলবে। ১৯ জুলাই মেধা তালিকা প্রকাশ হবে।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy