Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

বারণ করেছিলাম, তবু কেন ভোট দিলেন? বেলেঘাটায় রাস্তা আটকে শাসানি, দেখুন ভিডিয়ো

গত দু’দিন বাড়ি থেকেই বেরোতে পারেননি মারোদিয়া পরিবারের সদস্যরা।

বেলেঘাটায় ব্যবসায়ী মণীশ মারোদিয়াকে বাড়ির সামনে শাসানি। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

বেলেঘাটায় ব্যবসায়ী মণীশ মারোদিয়াকে বাড়ির সামনে শাসানি। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

নিজস্ব সংবাদাদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ১৬:০৪
Share: Save:

বেলাঘাটার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী মণীশ মারোদিয়া ওই এলাকায় গত ৪০ বছর ধরে রয়েছেন। এমন অভিজ্ঞতা তাঁর আগে হয়নি।

ভোটের আগের দিন রাতে বাড়িতে চড়াও হয়েছিল একদল যুবক। হুমকি দিয়েছিল, ‘‘ভোটের দিন কেউ যেন ঘর থেকে না বেরোয়। কাউকে যদি দেখি ঘর থেকে বেরিয়েছে, তাহলে খারাপ হয়ে যাবে।’’হুমকির পরে যদিও তিনি সপরিবারে ভোট দিয়েছিলেন গত ১৯ মে।

তার পর থেকেই শুরু হয়েছে শাসানি। ভোটের দিন রাতে ফের ওই যুবকেরা চড়াও হয়। রাস্তায় আটকে সরাসরি দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা। এক যুবককে বলতে শোনা যায়, “রাহুল সিন্‌হাকে... ঘুসা দেগা। যব মানা করকে গয়ে থে, তব কিউ ভোট দেনে গয়া। হামনে দেখা হ্যায় আপ ভোট দিয়ে। কলিজা তো ফাট রাহা থা। দেখ লেঙ্গে।”

আরও পড়ুন: ফের ধাক্কা খেল বিরোধীরা, ভোটগণনায় আগে ভিভিপ্যাট মেলানোর দাবি খারিজ করল কমিশন

এর পর থেকেই শুরু হয়ে মানসিক অত্যাচার। কোথাও কিছু নেই, বাড়ি সামনে এসে বাইকে করে এসে গালিগালাজ করে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত দু’দিন বাড়ি থেকেই বেরোতে পারেননি মারোদিয়া পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে আবার বাড়ির গেটের সামনে তিনটি গুমটি বসিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে এই কাণ্ড দেখে রীতিমতো আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন মণীশ।

বেলেঘাটা থানাতে ফোন করেন মণীশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে গুমটি সরানোর পর বাড়ির বাইরে বেরোতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। খাস কলকাতায় বেলেঘাটার মতো এলাকায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিশ্বাসই করতে পারছেন না মণীশ। গত ৪০ বছর ধরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের উল্টো দিকে বসবাস করছেন তিনি। ওই এলাকায় বাম, ডান সব রাজনৈতিক দলের পালাবদল দেখেছেন। কিন্তু এমন হুমকির মুখে কোনও দিন পড়েননি। তাঁর অভিযোগের আঙুল এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিকে। যাঁরা তার পরিবারকে হুমকি দিয়েছিলেন, সবাই পরিচিত। সকলে এলাকায় তৃণমূল করেন। মণীশের কথায়, “আমাদের পরিবারে প্রায় ২০ জন রয়েছে। আমার ছেলেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটতে পারে, স্বপ্নেও ভাবিনি।”

উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির রাহুল সিংহ-এর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে থেকেই ওই এলাকায় বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। স্থানীয়দের বক্তব্য, ভোট হারানোর ভয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মীরা হুমকি দিচ্ছিলেন। অন্যান্যদের মতো মণীশও তেমন হুমকির মুখে পড়েছিলেন।

আরও পড়ুন: ৭ দিন গ্রেফতার করা যাবে না, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি অর্জুন সিংহর​

রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে আনন্দবাজারকে বলেন, “এটা কোথাকার সংস্কৃতি। খুব খারাপ ব্যাপার। যা ইচ্ছে তাই করবে নাকি? পুলিশ ব্যবস্থা নিক। ওটা তো পরেশ পালের এলাকা। কী হচ্ছে এ সব?” এ বিষয়ে বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি তো কিছুই জানি না। আমার কানে আসেনি। কারা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে, দেখতে হবে।’’

সাধন পাণ্ডেই নন, এই ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দারাও সরব হয়েছেন। হুমকির ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ড করেছিলেন মারোদিয়া পরিবারের সদস্যরা। তা ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বেলেঘাটা থানা তদন্তে নেমেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE