জানলা ভাঙার চেষ্টা চলছে।—নিজস্ব চিত্র।
আগুন লেগেছে বুঝতে পেরেছেন। কামরা ক্রমশ ভরে যাচ্ছে ধোঁয়ায়। কিন্তু বেরোবার উপায় নেই। কারণ এসি কামরার জানলা-দরজা সব বন্ধ। বৃহস্পতিবার মেট্রোয় উঠে এমনই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হল যাত্রীদের। বেরোবার রাস্তা না পেয়ে আতঙ্কে সিঁটিয়ে যান তাঁরা। অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন ৪টে বেজে ৫৬ মিনিট। সবে রবীন্দ্রসদন স্টেশন ছেড়ে বেরিয়েছে মেট্রোর একটি এসি রেক। গোটা ট্রেনটাই ভিড়ে ঠাসা ছিল। তবে উঠতে-নামতে সুবিধা বলে ইঞ্জিন লাগোয়া কামরাটিতে ভিড় একটু বেশি-ই ছিল। আচমকাই পোড়া গন্ধ পেতে শুরু করেন যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন। সেই নিয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন তাঁরা। কোথা থেকে গন্ধ আসছে জানার চেষ্টা করছিলেন।
তবে তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। সেই সঙ্গে নিভে যায় গোটা ট্রেনের আলো। অথচ সেই অবস্থায় চলতে থাকে ট্রেন। আতঙ্কে হেল্পলাইনে ফোন করেন অনেকে। তবে উত্তর মেলেনি সেখান থেকে। আর তার পরই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। আতঙ্কে মরিয়া যাত্রীদের অনেকে জানলার কাচ ভাঙার চেষ্টা শুরু করেন। টেনে খুলে ফেলতে চেষ্টা করেন বন্ধ দরজা। একসময় জানলা ভেঙেও ফেলতে সক্ষম হন এক যাত্রী। তার মধ্যে দিয়ে লাফিয়ে লাইনে নেমে পড়েন দু-একজন।
আরও পড়ুন: চলন্ত কামরায় ধোঁয়া, আগুন আতঙ্কে হুড়োহুড়ি, বন্ধ মেট্রো চলাচল
আরও পড়ুন: প্রায় অমিল অ্যাপ ক্যাব, রাস্তায় নেমে গুন্ডামি চালক-মালিকদের
খবর পৌঁছে গিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু অভিযোগ, উদ্ধারকাজে হাত লাগান তাঁরা প্রায় আধ ঘণ্টা পর। ৫টা বেজে ২২ মিনিট নাগাদ দরজা খুলে যাত্রীদের বের করে আার কাজ শুরু করেন তাঁরা। তবে অসুস্থ যাত্রীদের জন্য নূন্যতম পরিষেবাটুকুও ছিল না। লাইনের উপর দিয়েই হাঁটিয়ে আনা হয় সকলকে।
রোজ মেট্রো দিয়েই আনাগোনা হাজার হাজার মানুষের। বিপদ হতেই পারে কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের গা ছাড়া মনোভাবে ফুঁসে ওঠেন তাঁরা। স্টেশন চত্বরেই বিক্ষোভ শুরু করে দেন একদল যাত্রী। ধোঁয়ায় দমবন্ধ ওই কামরা থেকে বেঁচে ফিরতে পারবেন বলে ভাবেননি, এমনটাও বলতে শোনা যায় অনেকে। আবার অনেকটা সময় কেটে যাওয়ার পরও আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে পারেননি বহুজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy