Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Kolkata News

শিশুমৃত্যু ঘিরে ফের বিতর্কে অ্যাপোলো, ভাঙচুর

মাত্র মাস দুয়েকের ব্যবধান। ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমআরআই-এর পর এ বার অ্যাপোলো হাসপাতালে ধুন্ধুমার। চার মাসের এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে বুধবার সকালে অ্যাপোলোতে উত্তেজনা ছড়াল।

শিশুমৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল পরিজনের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।

শিশুমৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল পরিজনের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ১২:৩৩
Share: Save:

মাত্র মাস দুয়েকের ব্যবধান। ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমআরআই-এর পর এ বার অ্যাপোলো হাসপাতালে ধুন্ধুমার। চার মাসের এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে বুধবার সকালে অ্যাপোলোতে উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগ, শিশুমৃত্যুর খবর শোনার পরই হাসপাতালে ভাঙচুর চালান ওই পরিবারের আত্মীয়েরা। যদিও ওই শিশুর আত্মীয়েরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফুলবাগান, মানিকতলা, বেলেঘাটা ও নারকেলডাঙা থানার পুলিশ। হাসপাতালে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। দুপুর ১টা নাগাদ পরিস্থিতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জোকার নবপল্লির বাসিন্দা ও শিশুর বাবা অভিজিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই তার মেয়ে অসুস্থ ছিল। তার মলের সঙ্গে রক্ত আসছিল। প্রথমে তাকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে কোনও সুরাহা না করতে পেরে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাকে অ্যাপোলোতে রেফার করেন। সেখানেই কোলনস্কপির করার পরামর্শও দেওয়া হয়। সেই মতো গত ১৫ এপ্রিল সকালে তাঁর মেয়েকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

আরও পড়ুন

এ-পারে স্বামীর দেহ ও-পারে ছেলের

মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুর আত্মীয়েরা।

পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, কোলনস্কপির জন্য ওই শিশুকে সাত ঘণ্টা নির্জলা রাখার কথা বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু, ভর্তির দু’দিন কেটে গেলেও কোলনস্কপি করা হয়নি ওই শিশুর। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, চিকিৎসক না থাকায় ওই দিনও পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। টানা দু’দিন সাত ঘণ্টা করে না খেয়ে থাকার ফলে শিশুটি নেতিয়ে যায় বলে পরিবারের অভিযোগ। কোলনস্কপির জন্য সোমবার সকালে ফের ওই শিশুটিকে সাত ঘণ্টা না খাইয়ে রাখা হয় বলে জানান ওই পরিবারের এক সদস্য। এর মধ্যেই তাকে অ্যানাস্থেশিয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, তার পর গত কাল ৫টা নাগাদ তার জ্ঞান না ফেরায় শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। রাত ১১টা নাগাদও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। বরং রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় তাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হবে বলে জানান চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সেই মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সইসাবুদও করে দেয় পরিবার। বুধবার ভোর ৬টা নাগাদও মেয়ের জ্ঞান না ফেরায় হাসপাতাল থেকেই সোজা ফুলবাগান থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে তারা। পরিবারের অভিযোগ, অ্যানাস্থেশিয়ার ওভারডোজেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

ক্ষোভে ফেটে পড়লেন আত্মীয়েরা।

এ দিন ফের হাসপাতালে ফিরে এলে শিশুর মৃত্যুর খবর পান তারা। ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার আত্মীয়েরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গেটে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে কাচের গেট। রিসেপশনও তচনছ করা হয়েছে।

হাসপাতাল চত্বরে পুলিশকর্মীরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। যদিও পরিবারের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তর্কাতর্কি হলেও তাঁরা ভাঙচুর করেননি। বরং থানা থেকে হাসপাতালে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, সেখানে আগে থেকেই বেশ কয়েক জন ভাঙচুর চালাচ্ছিল। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ না খুললেও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Apollo Hospital Death Negiligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE