প্রতীকী ছবি।
তাঁর খোঁজে গোটা পাড়ায় হুলস্থুল। সোমবার গভীর রাতে স্থানীয়দের সঙ্গে তখন খালের পাঁকে নেমে পড়েছেন পুলিশ, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। স্বামী বেঁচে নেই ভেবে মধ্যরাতে খালের পাড়ে বসে মাঝেমধ্যেই সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী! এ দিকে যাঁকে ঘিরে এত কাণ্ড, সেই ব্যক্তি তখন বাড়ি ফিরে স্নান সেরে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন!
ভোর ৪টে নাগাদ সেই খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে স্ত্রী বললেন, ‘‘ধর সকলে। ওকে তুলে খালে ফেলে আয়। এমন লোকের বেঁচে না থাকাই ভাল। জীবনটা শেষ করে দিল!’’ কোনও মতে পাড়ার লোকজন শান্ত করলেন মহিলাকে।
অরবিন্দ সেতু থেকে স্বামী খালে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে সোমবার রাতেই খবর পেয়েছিলেন মুচিবাজার এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা। রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সেতুতে উঠে দেখেন, স্বামীর জুতো পড়ে রয়েছে এক কোণে। আশপাশের লোকজন জানান, এক ব্যক্তিকে খালে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন তাঁরা। এর পরেই শুরু হয় নাটক।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ছুড়ল স্বামী
রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সেতুর উপরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে রয়েছেন ঝাঁপ দেওয়া যুবকের স্ত্রী। নীচের খালে তখন তাঁর স্বামীর খোঁজে জোর তল্লাশি চলছে। নামানো হয়েছে নৌকা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে আসেন দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। রাত ৩টে নাগাদ সে দিনের মতো খোঁজাখুঁজি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে খবর আসে, ওই যুবক বাড়িতে ঘুমোচ্ছেন।
বা়ড়ি গিয়ে খোঁজ মেলে যুবকের। এক বাসিন্দা জানান, রাত দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসেছিলেন ওই যুবক। কুয়োর জলে স্নান করে ঘুমিয়ে পড়েছেন। এর পরেই স্বামীর উপর রেগে স্ত্রী বলতে শুরু করেন, ‘‘সবাইকে বিপদে ফেলে লোকটা। আজ ভেবেছিলাম ও আর নেই।’’ তদন্তকারীরা জানান, ওই যুবক স্থানীয় একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ করেন। বছরখানেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। সোমবার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ঝগ়ড়া করেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। ভোরে থানায় ফিরে যাওয়ার আগে মানিকতলা থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘একে ধরে পেটানো উচিত। সারা রাত খাটিয়ে মারল!’’ এত কিছুর পরেও নির্বিকার ওই যুবকের কথায়, ‘‘খালে পড়ে তো ডুবলামই না! তাই অন্য দিক দিয়ে উঠে চলে এলাম। বিশেষ লাগেনি। পা-টা একটু কেটে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy